বিএনপির প্রস্তাবের দিকে ‘হেলে গেছেন’ ইউনূস, এনসিপির অভিযোগ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জুন ১৭, ২০২৫, ০৭:০৪ পিএম

বিএনপির প্রস্তাবের দিকে ‘হেলে গেছেন’ ইউনূস, এনসিপির অভিযোগ

ছবি: সংগৃহীত

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের ‘বিএনপির প্রস্তাবের’ দিকে হেলে যাওয়ার অভিযোগ তোলার পাশাপাশি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে জাতীয় নাগরিক পার্টিএনসিপি।

দলটির রাজনৈতিক লিয়াজোঁ কমিটির প্রধান আরিফুল ইসলাম আদিব বলেন, কমিশনের ছয়টি প্রস্তাবের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা যেটির দিকে ‘হেলে গেছেন’, সেটি মূলত বিএনপির দেওয়া প্রস্তাব।

মঙ্গলবার, ১৭ জুন সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ৩০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার বৈঠক শুরু হয়।

সেখানে দুপুরের খাবার বিরতিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে কথা বলেন আরিফুল ইসলাম আদিব; কথা বলেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরও।

বলেন, “জাতীয় ঐকমত্য কমিশন যে পদ্ধতিতে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তাদের দল বাছাই করার যে পদ্ধতি, সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছি। ঈদের আগে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি হিসেবে সরকারপ্রধানের বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছি।

“সংস্কার কমিশন আগে বলেছিল, কোন পদ্ধতিতে জাতীয় সনদ বা জুলাই সনদ তৈরি হবে, সেটা নিয়ে তারা ছয়টা প্রস্তাব দিয়েছে। এগুলোর মধ্যে একটা প্রস্তাব ছিল, সংসদ নির্বাচনের পর সাংবিধানিক সংস্কার করা।”  

আদিব বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা ঈদের আগে (জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে) নির্বাচনের যে তারিখ (এপ্রিলের প্রথমার্ধ) ঘোষণা করেছিলেন ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি হিসেবে, সেখানে তিনি কমিশনের ছয়টা প্রস্তাবের মধ্যে একটির দিকে হেলে যান, যেটি দিয়েছে বিএনপি।”

আদিব বলেন, “ঐকমত্য কমিশন এখন যে পথে এগোচ্ছে, সেখানে নির্বাচনে কোন কোন বিষয় থাকবে, তা নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের অবস্থান কিছুটা প্রশ্নবিদ্ধ। বিএনপি যেখানে পরবর্তী সংসদের সংস্কার হবে বলেছে, সেখানে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য কিছুটা হেলে যায়।”

ঐকমত্য কমিশন নিয়ে প্রশ্ন তুলে আদিব বলেন, “ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে যেসব রাজনৈতিক দলকে ডাকা হচ্ছেএখানে প্রায় ৩০টি দল। সেখানে কাদের কতটুকু সাংগঠনিক কাঠামো আছে, তাদের নিবন্ধন আছে কিনা, কোন পদ্ধতিতে ঢাকা হচ্ছে, সেসব বিষয় আমরা স্পষ্ট নয়।

“আমরা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে বলেছি, কাদেরকে এখানে ডাকা হচ্ছে, সেখানে কি কোনো একটি দলের সুপারিশে ডাকা হচ্ছে কি না? আমরা দেখি ঐকমত্য কমিশনে আসা অনেক দলের স্পষ্ট কোনো বক্তব্য থাকে না, শুধু একটি দলের প্রতি তাদের হ্যাঁ-না বলার থাকে। যখনই বিপরীত কোনো বক্তব্য থাকে, তখন হট্টগোল করে।”

তিনি বলেন, “আমরা বলেছি জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কোন পদ্ধতিতে এসব দলকে বাছাই করেছে, সেটা স্পষ্ট করতে হবে।

“জুলাই গণঅভ্যুত্থান শুধু রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণে হয়নি, এখানে সব পেশাজীবী জনতার একটা বড় অংশগ্রহণ ছিল, যাদের কোনো প্রতিনিধি নাই। পাশাপাশি এখানে ছাত্রদের বড় অংশগ্রহণ ছিল। সুতরাং আমরা মনে করি, এখানে যাদের ডাকা হয়েছে, তারা সারা দেশের জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আসতে পারে না। কারণ শুধু রাজনৈতিক দলগুলো যদি জনগণের ম্যানডেন্ট নিয়ে আসতে পারত, তাহলে আপনারা দেখেছেন ভোটের আগে ৬৪ দল, ৫৬ দল ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকার পতনের আন্দোলন করেছে, কিন্তু তারা কিছুই করতে পারেনি।”

তিনি বলেন, “আমরা মনে করি, গণঅভ্যুত্থানে তিনটি অংশীদাররাজনৈতিক দল, জনতা ও শিক্ষার্থী। সেক্ষেত্রে কিছু রাজনৈতিক দলকে ডাকা হয়েছে, কিছু দলকে ডাকা হয়নি। কোন পদ্ধতিতে ঢাকা হয়েছে, সেই বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা আমরা চেয়েছি।”

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নূর বলেন, “একটি বিশেষ দলকে প্রাধান্য দিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ বা আলোচনাটা নিয়ে যাওয়ার একটা অভিযোগ জামায়াতসহ কিছু কিছু দল তুলেছে। আমরাও বলেছি, এখানে রাজনৈতিক দলের বাইরেও গণ-আন্দোলনে অনেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এখানে সাংবাদিকসহ সব পেশাজীবী সংগঠনের মতামত নেওয়া দরকার। এখানে কোন দলকে কোন মানদণ্ডে বাছাই করা হয়েছে, সেটাও আমরা জানি না।

“আজ আমরা যে বলব যে এতটি দল এতটি বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেছে, আসলে সেই দলের ক্রাইটেরিয়া কী?”

Link copied!