জাকসু নির্বাচন ঘিরে বিতর্ক, আরেক নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ

জাতীয় ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৫, ০৪:০৭ পিএম

জাকসু নির্বাচন ঘিরে বিতর্ক, আরেক নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচন ঘিরে একের পর এক বিতর্কের মধ্যে কমিশনের আরও এক সদস্য পদত্যাগ করেছেন। শনিবার দুপুর ২টার দিকে ড. রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

এর আগে শুক্রবার রাতে কমিশনের আরেক সদস্য অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার পদত্যাগ করেছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, নির্বাচনের নানা অনিয়ম ও অভিযোগের সুরাহা না করেই ভোট গণনা চালিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদে তিনি কমিশন থেকে সরে দাঁড়ান।

গত বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি হলে জাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের আগের দিন রাতে বামপন্থি সংগঠন ও ছাত্রদলসমর্থিত প্রার্থীরা অভিযোগ তোলেন, ভোট গণনার মেশিন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের মালিক জামায়াতের নেতা। পরে কমিশন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মেশিনের পরিবর্তে হাতে ভোট গণনার সিদ্ধান্ত নেয়।

ভোটের দিন বিকেল সাড়ে তিনটায় ছাত্রদল ভোট বর্জন করে। সন্ধ্যা সাতটায় বামসমর্থিত আরও চারটি প্যানেলও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ায়। আটটি প্যানেলের মধ্যে পাঁচটি প্যানেলের ৬৮ জন প্রার্থী ভোট বর্জন করলেও তিনটি প্যানেলের ১১১ জন প্রার্থী থেকে যান নির্বাচনে।

নানা পাল্টাপাল্টি অভিযোগের কারণে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে হলগুলো থেকে ব্যালট বাক্সগুলো সিনেট ভবনে আনা হয়। সব প্রস্তুতি শেষে রাত ১০টার পর শুরু হয় গণনা।

বৃহস্পতিবার ভোট শেষ হওয়ার আধা ঘণ্টা আগে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক নজরুল ইসলামসহ ওই ফোরামের আরও দুই শিক্ষক অধ্যাপক শামীমা সুলতানা ও অধ্যাপক নাহরিন ইসলাম খানও নির্বাচন বর্জন করেন।

শুক্রবার সকালে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌসের মৃত্যুর পর পুরো ক্যাম্পাসে শোক নেমে আসে। তবে প্রার্থী ও শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ভোট গণনায় ধীরগতি ও অনিয়মের পেছনে শিক্ষকদের দলীয় রাজনীতি ও গ্রুপিং কাজ করছে। শুক্রবার বিকেলে প্রায় তিন ঘণ্টা ভোট গণনা বন্ধও ছিল। পরে সন্ধ্যায় হল সংসদের ভোট গণনা শেষ হলে কেন্দ্রীয় সংসদের ভোট গণনা শুরু হয়।

এরপর রাত ৯টার দিকে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি ও নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার পদত্যাগ করেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ছিল না। বৃহস্পতিবার থেকে আমার ওপর পদত্যাগ না করার চাপ থাকলেও আমি এই পরিস্থিতিতে দায়িত্ব চালিয়ে যেতে পারছি না।

তিনি আরও জানান, “নির্বাচনে একাধিক অনিয়ম ও গুরুতর ত্রুটি দেখেছি। এগুলো প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। আমার মতামত কমিশন গ্রহণ না করেই ভোট গণনা শুরু করেছে। সময়ের সংকটে দায়িত্ব পালন অসম্ভব হওয়ায় আমি পদত্যাগ করেছি।

ড. রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধার পদত্যাগের মধ্য দিয়ে জাকসু নির্বাচনকে ঘিরে বিতর্ক আরও গভীর হলো বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা।

Link copied!