২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত আগামী দু’মাস পৃথিবীর আকাশে থাকবে অন্য একটি ‘চাঁদ’। নিজস্ব উপগ্রহ ছাড়াও আগামী দু’মাস পৃথিবীর আকাশে থাকবে অন্য একটি ‘চাঁদ’। বিজ্ঞানীরা যার আকার বিবেচনা করে নাম দিয়েছেন ‘মিনি-মুন’।
আমেরিকান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির একটি গবেষণায় এই গ্রহাণুর গঠন, ভ্রমণপথ ও অন্যান্য বিষয়গুলো উঠে এসেছে। এই গবেষণায় বলা হয়েছে, পৃথিবী প্রদক্ষিণ শেষে গ্রহাণুটি সূর্যকেন্দ্রিক একটি কক্ষপথে (হেলিওসেন্ট্রিক অরবিট) ফিরে যাবে।
গত ৭ আগস্ট প্রথম এই গ্রহাণুটির সন্ধান পান বিজ্ঞানীরা, নাসার দক্ষিণ আফ্রিকাভিত্তিক অ্যাস্টেরয়েড টেরেস্ট্রিয়াল-ইমপ্যাক্ট লাস্ট অ্যালার্ট সিস্টেম বা অ্যাটলাস ব্যবহার করে।
মাদ্রিদের কমপ্লুটেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গাণিতিক বিজ্ঞান অনুষদের গবেষক কার্লোস দে লা ফুয়েন্তে মার্কোস জানান, গ্রহাণুটির ব্যাস প্রায় ৩৭ ফুট (১১ মিটার)।
পৃথিবীর মহাকর্ষে আকৃষ্ট হয়ে কোনো গ্রহাণুর কক্ষপথ প্রদক্ষিণ করার ঘটনা এটিই প্রথম না।
এরকম অস্থায়ী চাঁদের দেখা আগেও পেয়েছে পৃথিবী। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পৃথিবীর কক্ষপথে `২০২০ সিডি ৩` নামের একটি গ্রহাণুর দেখা পান বিজ্ঞানীরা। এরপর গবেষণায় জানা যায়, শনাক্ত হওয়ার আগে কয়েক বছর ধরে আমাদের গ্রহকে প্রদক্ষিণ করছিল গ্রহাণুটি।
পৃথিবীর দিকে দ্রুত গতিতে আসা গ্রহাণুগুলো সাধারণত আমাদের বায়ুমণ্ডলে আছড়ে পড়ে, বা ভস্মীভূত হয়ে যায়। উপগ্রহ বা চাঁদের মতো পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করতে হলে একটি গ্রহাণুকে সঠিক গতি এবং দিক মেনে পৃথিবীর দিকে আসতে হবে।
দে লা ফুয়েন্তে মার্কোস বলেন, `মিনি মুনে পরিণত হতে হলে আগত একটি বস্তুকে ধীরে ধীরে পৃথিবীর কাছে আসতে হবে।`
মিনি মুনে পরিণত হতে যাওয়া কোনো গ্রহাণুকে ঘণ্টায় ২ হাজার ২৩৭ মাইল গতিতে পৃথিবীর ২৮ লাখ মাইলের মধ্যে আসতে হবে বলে জানান মার্কোস।
পৃথিবী থেকে খোলা চোখে, অপেশাদার টেলিস্কোপ বা দূরবীন দিয়ে `২০২৪ পিটি৫` নামের এই গ্রহাণুকে দেখা যাবে না বলেও জানান এই গবেষক।
এর আগে ১৯৮১ সালে এবং ২০২২ সালে দু’বার এই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। অর্থাৎ, পৃথিবীর টানে এর আগে দু’বার দু’টি গ্রহাণু তার কক্ষপথে প্রবেশ করেছিল। কিছু দিন থাকার পর টান কাটিয়ে আবার তারা বেরিয়ে গিয়েছে।