চ্যাট জিপিটি দিয়ে সাহিত্য রচনা; পেলেন পুরস্কারও!

শামস তারেক আজিজ

জানুয়ারি ২৭, ২০২৪, ০৭:৩৮ পিএম

চ্যাট জিপিটি দিয়ে সাহিত্য রচনা; পেলেন পুরস্কারও!

সংগৃহীত ছবি

বিগত বছরগুলোতে বিশ্বে প্রায় সকল ক্ষেত্রেই পড়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ছোঁয়া। চ্যাট জিপিটির মতো জেনারেটিভ এআই আসার পর থেকে অনেকেই ধারণা করছিলেন সৃজনশীল ক্ষেত্রে এগুলো মানুষের স্থলাভিষিক্ত হবে। কিন্তু এই এআই ব্যবহার করে সাহিত্য রচনা করা যাবে এবং সেই সাহিত্যের জন্যে ঔপন্যাসিকেরা পুরস্কৃত হবেন এমনটা হয়তো আগে কেউ ভাবেননি। তবে সম্প্রতি এমনই এক ঘটনার সাক্ষী হল জাপানের নাগরিকেরা।

জাপানের সবচেয়ে সম্মানজনক সাহিত্য পুরস্কার হলো আকুতাগাওয়া সাহিত্য পুরস্কার। বুধবার ১৭০তম আকুতাগাওয়া সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন দেশটির লেখিকা রি কুদান। 

‘দ্য টোকিও টাওয়ার অব সিম্প্যাথি’ উপন্যাসটির জন্যে এই পুরস্কার পেয়েছেন ৩৩ বছর বয়সী এই লেখিকা। আর সম্মান জনক এই পুরস্কার পাবার পর তিনি স্বীকার করেছে তার উপন্যাসটি রচনা করতে তিনি এআইয়ের সহায়তা নিয়েছেন।

এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি আমার উপন্যাস লেখায় এআইয়ের ব্যবহার চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছি। সেই সঙ্গে এর মাধ্যমে আমার সৃজনশীলতাকে সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করব।’ 

এক সংবাদ সম্মেলনে লেখিকা আরও বলেন, ‘দ্য টোকিও টাওয়ার অব সিম্প্যাথি’ নামের উপন্যাসের ৫ শতাংশ এআই ব্যবহার করে লেখা। পুরস্কার প্রদান কমিটির সদস্যরা বইয়ের ওই অংশকে ‘কার্যত ত্রুটিহীন’ বলে মতামত দিয়েছেন।

সম্প্রতি বার্তা সংস্থা সিএনএনের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেরা উপন্যাসের জন্য এই নতুন লেখিকাকে গত বুধবার আকুতাগাওয়া পুরস্কার দেওয়া হয়।

একজন স্থপতি কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে বিশাল আকারের একটি অট্টালিকা ডিজাইন করতে চান। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই রচিত হয়েছে ‘দ্য টোকিও টাওয়ার অব সিম্প্যাথি’ উপন্যাসটি। টোকিও শহরে বহুতল আরামদায়ক কারাগার নির্মাণে দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন স্থপতির উভয়সংকটকে কেন্দ্র করেই উপন্যাসটির গল্প এগিয়েছে। উপন্যাসর থিম একটি এআই। গল্পে আইন ভঙ্গকারীদের পুনর্বাসনের কথা বলা হয়েছে।  

এ নিয়ে রি কুদান বলেন, নিজের জীবনের যেসব সমস্যার কথা অন্য কাউকে বলতে পারেন না, সেগুলোর সমাধানে এআইয়ের পরামর্শ নেন তিনি।

অবশ্য কুদানই প্রথম নন, যিনি সৃষ্টিশীল কাজে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন। এই প্রযুক্তির বিকাশের মাধ্যমে অনেক সৃজনশীল মানুষের জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে বলেও আশঙ্কা অনেকের।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) প্ল্যাটফর্মে জাপানি লেখক ও পুরস্কার কমিটির সদস্য কেচিরো হিরানো বলেন, “এআই ব্যবহার করে রি কুদানের পুরস্কার জেতার ঘটনায় কোনো সমস্যা দেখছি না।” 

তিনি আরও বলেন, রি কুদানের উপন্যাসটিতে এআই ব্যবহার করার বিষয়টিকে ভুলভাবে নেওয়া হচ্ছে। কেউ যদি পুরো বইটি পড়ে তাহলে দেখতে পারবে, এতে এআই ব্যবহার করার কথা উল্লেখ রয়েছে। এই প্রযুক্তি নিয়ে ভবিষ্যতে আরও সমস্যা হবে। তবে রি কুদানের বইয়ের ক্ষেত্রে এটি কোনো সমস্যা নয়।

এই পুরস্কার প্রদানকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেটিজেনেরা সৃজনশীলভাবে এআই ব্যবহারে কুদানের কাজের প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছে। 

যদিও অপরদিকে অনেকে বলছেন, এআই ব্যবহার না করা লেখকদের জন্য এটি খুবই ‘অসম্মানজনক’।

Link copied!