প্রথাগত বিশ্বকোষের ধারণা পাল্টে দিতে স্বেচ্ছাসেবকদের লেখা মুক্ত–আধেয় বা ফ্রি–কনটেন্ট নিয়ে অনলাইনে চালু হয় উইকিপিডিয়া। এটি ইতিহাসের সর্ববৃহৎ ও সবচেয়ে বেশি পঠিত বিশ্বকোষ। এটি ইন্টারনেটে দীর্ঘদিন শীর্ষ ১০ ওয়েবসাইটের একটি হিসেবে নিজের অবস্থান ধরে রেখেছে। ২০২৩ সালে উইকিডিয়ার অবস্থান ছিল ৪ নম্বরে।
জিমি ওয়েলস ও ল্যারি স্যাংগার উইকিপিডিয়া প্রতিষ্ঠা করেন। মার্কিন অলাভজনক সংস্থা উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশন থেকে ২০০১ সালের ১৫ জানুয়ারি উইকিপিডিয়া ইন্টারনেটে প্রকাশিত হয়।
বিশ্বের প্রায় সব দেশ ও অঞ্চল থেকে উইকিভিত্তিক সম্পাদনাব্যবস্থা মিডিয়াউইকি ব্যবহার করে উইকিপিডিয়ান নামে পরিচিত স্বেচ্ছাসেবকেরা এই বিশ্বকোষে নিবন্ধ লেখেন ও প্রকাশ করেন। বর্তমানে উইকিপিডিয়ায় সক্রিয় সম্পাদক রয়েছেন ২ লাখ ৮২ হাজার ৮৫৭ জন। নিবন্ধিত ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১১ কোটি ১৭ লাখ ১৯ হাজার ৮০৭ জন।
উইকিপিডিয়া প্রথমে শুধু ইংরেজি ভাষায় ছিল। দ্রুতই অন্যান্য ভাষায় এই বিশ্বকোষের উন্নয়ন করা হয়। ইংরেজি, বাংলাসহ ৩২৬টি ভাষার সব সংস্করণের উইকিপিডিয়ায় এখন ৬ কোটি ২০ লাখ নিবন্ধ রয়েছে। প্রতি মাসে ২০০ কোটি যন্ত্র থেকে উইকিপিডিয়া দেখা হয়। গত বছরের নভেম্বর মাস পর্যন্ত হিসাবে প্রতি মাসে ১ কোটি ৪০ লাখের বেশি সম্পাদনা হয়ে থাকে এই বিশ্বকোষে (প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৫ দশমিক ২ সম্পাদনা)।
সিমিলারওয়েবের তথ্যমতে, উইকিপিডিয়া বেশি দেখা হয় যুক্তরাষ্ট্র থেকে। উইকিপিডিয়া ব্যবহারের ২৬ শতাংশই আসে দেশটি থেকে। এরপর আছে জাপান (৫ দশমিক ৯ শতাংশ), যুক্তরাজ্য (৫ দশমিক ৪ শতাংশ), জার্মানি (৫ শতাংশ), রাশিয়া (৪ দশমিক ৮ শতাংশ) এবং বাকি দেশগুলো মিলিয়ে ৫৪ শতাংশ।
তথ্যের বড় উৎস হিসেবে উইকিপিডিয়া এখন সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত বিশ্বকোষ। নিবন্ধ সন্নিবেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয় উইকিপিডিয়াতে।
তবে এই মুক্ত বিশ্বকোষে প্রকাশিত নিবন্ধের বস্তুনিষ্ঠতা ও বিশ্বস্ততা নিয়ে সমালোচনাও রয়েছে। বিশেষ করে লিঙ্গবৈষম্যের অভিযোগ রয়েছে উইকিপিডিয়ার বিপক্ষে। নানা কারণে বিভিন্ন সময় একাধিক দেশে এই মুক্ত বিশ্বকোষ নিষিদ্ধ করাও হয়েছে। তারপরও বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে উইকিপিডিয়া।