এশিয়া কাপে শ্রীলংকার কাছে হার

কোনো অংকই মেলেনি বাংলাদেশের

স্পোর্টস ডেস্ক

আগস্ট ৩১, ২০২৩, ১০:২২ পিএম

কোনো অংকই মেলেনি বাংলাদেশের

নাজমুল হোসেন শান্ত দলীয় সর্বোচ্চ ৮৯ রান করেন ছবি : সংগৃহীত

কোনো অংকই মেলেনি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের। এশিয়া কাপে শ্রীলংকার কাছে ৫ উইকেটে হেরেছে টাইগাররা। না ব্যাটিংটা ঠিকমত হয়েছে। না বোলাররা লংকান ব্যাটারদের চেপে ধরতে পেরেছে। আবার এতো কম রান পুঁজি করে তাদের দোষ দেওয়াটাও তো অন্যায়। এখন পরের ম্যাচ ৩ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানে। সে ম্যাচে টিকে থাকার লড়াই। 

বাংলাদেশ মাত্র ১৬৪ রানে অলআউট হয়। জবাবে শ্রীলংকা ৫ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে নোঙর ফেলে। বাংলাদেশের পরের রাউন্ডে যাওয়াটা কঠিন হয়ে গেল। ৩৯ ওভারে জয় নিশ্চিত করে শ্রীলংকা (১৬৫/৫)। 

শ্রীলংকার চরিথ আশালঙ্কা ৬২ ও সাদিরা সামারাবিক্রমা ৫৪ রান করেন। মূলত এই দুজনই খেলা শেষ করে দেন। 

সাকিব ২৯ রানে ২ টি উইকেট শিকার করেন। আর ১টি করে উইকেট মেহেদী, শরিফুল ও তাসকিনের।  

এর আগে শান্তর ৮৯ রানে বাংলাদেশ ১৬৪ রান তুলতে পারে। বাংলাদেশের ব্যাটাররা কেউ মান রাখতে পারেননি। 

পাল্লেকেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্বান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। এ ম্যাচে দেশের ১৪৩তম ওয়ানডে খেলোয়াড় হিসেবে অভিষেক হয় বাঁ-হাতি ওপেনার তানজিদ হাসানের। কিন্তু অভিষেকটা রাঙাতে পারেননি তানজিদ।
মোহাম্মদ নাইমের সাথে ইনিংস শুরু করে দ্বিতীয় ওভারে শ্রীলংকার স্পিনার মহেশ থিকশানার দ্বিতীয় বলে লেগ বিফোর আউট হন তানজিদ। রিভিউ নেয়ার সুযোগ থাকলেও, আম্পায়ারের সিদ্বান্ত মেনে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ম্যাচে শূন্য হাতে  প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন ২ বল খেলা তানজিদ। দেশের ১৬তম ওয়ানডে ব্যাটার হিসেবে অভিষেকেই ‘ডাক’ মারলেন ২২ বছর বয়সী তানজিদ।
 ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরির পথেই ছিলেন শান্ত। কিন্তু থিকশানার করা ৪২তম ওভারের দ্বিতীয় ডেলিভারির ক্যারম বল ঠিকমতো খেলতে না পেরে বোল্ড হন  ৭টি চারে ১২২ বলে ৮৯ রান করেন শান্ত।
দলীয় ১৬২ রানে অষ্টম ব্যাটার হিসেবে শান্ত ফেরার পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি বাংলাদেশ। ৪২ দশমিক ৪ ওভারে ১৬৪ রানে অলআউট হয় টাইগাররা। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং ৩২ রানে ৪ উইকেট নেন পাথিরানা। ১৯ রানে ২ উইকেট নেন থিকশানা।
১৬৫ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে শুরুতে বাংলাদেশ বোলারদের তোপের মুখে পড়ে শ্রীলংকা। তৃতীয় ওভারে দিমুথ করুনারতœকে ১ রানে বোল্ড করেন পেসার তাসকিন। চতুর্থ ওভারে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় সাফল্য এনে দেন পেসার শরিফুল। উইকেটের পেছনে মুশফিকের দারুন ক্যাচে ১৪ রানে আউট হন নিশাঙ্কা।
১৫ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে শ্রীলংকা। তৃতীয় উইকেটে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন কুশল মেন্ডিস ও সাদিরা সামারাবিক্রমা। ধীরে ধীরে বড় হতে থাকা জুটির সামনে  বাঁধা হয়ে দাঁড়ান সাকিব। সাবধানে খেলতে থাকা মেন্ডিস (৫) সাকিবের বলে বোল্ড আউট হলে স্কোর বোর্ডে ৪৩ রান তুলতেই  ৩ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা।  এতে  আত্মবিশ^াসী হয়ে উঠে টাইগার শিবির।
তবে চতুর্থ উইকেটে বাংলাদেশ বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন সামারাবিক্রমা ও চারিথ আসালঙ্কা। ২২তম ওভারে শ্রীলংকার রান ১শতে নেন তারা। ৫৯ বল খেলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের চতুর্থ হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ন করেন সামারাবিক্রমা।
সামারাবিক্রমা-আসালঙ্কার জমে যাওয়া জুটি ভাঙ্গতে মরিয়া হয়ে ওঠে  বাংলাদেশের বোলাররা। অবশেষে স্পিনার মাহেদির হাত ধরে আসে ব্রেক-থ্রু। ৩০তম ওভারে মাহেদির বলে স্টাম্প আউট হন ৭৭ বল খেলে ৬টি চারে ৫৪ রান করা সামারাবিক্রমা। আসালঙ্কার সাথে ১১৯ বলে ৭৮ রান যোগ করে শ্রীলংকাকে জয়ের পথে রেখে যান তিনি। সামারাবিক্রমা যখন ফিরেন, তখন ৬ উইকটে হাতে নিয়ে জয় থেকে ৪৪ রান দূরে শ্রীলংকা।
ক্রিজে নতুন আসা ব্যাটার ধনাঞ্জয়াকে ২ রানে বোল্ড করেন সাকিব। পরপর দুই ওভারে দুই উইকেট নিয়ে লড়াইয়ে ফিরে বাংলাদেশ। কিন্তু ষষ্ঠ উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ৩৭ রান তুলে ৬৬ বল বাকী থাকতে শ্রীলংকাকে জয়ের স্বাদ দেন আসালঙ্কা ও অধিনায়ক শানাকা।
নবম অর্ধশতক তুলে ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় আসালঙ্কা ৬২ এবং শানাকা ১৪ রানে অপরাজিত থাকেন। বাংলাদেশের সাকিব ১০ ওভারে ২৯ রানে ২ উইকেট নেন। ১টি করে উইকেট শিকার করেন তাসকিন-শরিফুল ও মাহেদি।
আগামী ৩ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের লাহোরে গ্রুপের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। আফগানদের কাছে হেরে গেলেই এশিয়া কাপ থেকে বিদায় ঘন্টা বাজবে সাকিবের দলের।

 

Link copied!