ভারতের পশ্চিমবঙ্গের প্রাণকেন্দ্র কলকাতা ও এর আশেপাশের অঞ্চলে যারা করোনা পরীক্ষা করছেন তাদের মধ্যে প্রতি দুইজনের মধ্যে একজনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হচ্ছে।
যদিও কলকাতা বাদে পশ্চিমবঙ্গের বাকি অংশে এই হার প্রতি চারজনে একজন। চলতি মাসের শুরুর দিকের চেয়ে শনাক্তের হার এখন পাঁচগুণ বেশি। সেসময় পরীক্ষা করা প্রতি ২০ জনের একজন ছিলেন করোনা শনাক্ত।
কলকাতায় পিসিআর পরীক্ষা করছে এমন এক গবেষণাকেন্দ্রের চিকিৎসক বলেন, ‘কলকাতা ও এর আশেপাশের এলাকাগুলোর গবেষনাগারে পজিটিভিটির হার ৪৫ থেকে ৫৫ শতাংশ। রাজ্যের অন্য অংশে এই হার ২৪ শতাংশ।
তিনি আরও বলেন, এটি শুধু হিমবাহের অগ্রভাগ। ‘প্রকৃত পজিটিভিটির হার আরও অনেক বেশি হবে। রোগের লক্ষণহীন অথবা স্বল্প লক্ষণযুক্ত অনেক রোগী আছেন যারা পরীক্ষা করাচ্ছেন না। আমরা যথেষ্ট পরিমাণ পরীক্ষা করছি না। বেশি পরীক্ষা করা থেকে আমাদের বিরত থাকলে চলবে না কারণ এই ঢেউ নিয়ন্ত্রণ করতে এটি অন্যতম বড় একটি উপায়।’
পিয়ারলেস হাসপাতালের অণুজীববিজ্ঞানী ভাস্কর নারায়ণ চৌধুরী বলেন, ‘একটি কারণ হলো, ভাইরাসের ধরণটির অতি সংক্রমণের ক্ষমতা যা অল্প সময়ের মধ্যে অনেক মানুষকে আক্রান্ত করে ফেলে। উচ্চ পজিটিভিটি হারের আরেকটি কারণ হলো, যাদের মধ্যে লক্ষণ দেখা যাচ্ছে শুধু তারাই পরীক্ষা করাতে আসছেন।’
মেডিক্যাল গ্রুপ অব হসপিটালস’র চেয়ারম্যান ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অলোক রায় বলেন, ‘আমাদের গবেষণাগারে পজিটিভিটির হার ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। পরীক্ষার জন্য নমুনার চাপ অনেক বেশি। তবে এটি ভাল যে মানুষজন পরীক্ষা করাতে যাচ্ছেন। কত দ্রুত আমরা শনাক্ত ও রোগীকে আলাদা করতে পারছি, চিকিৎসা ও মৃত্যুর ওপর তার একটি প্রভাব রয়েছে।’
কলকাতার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কলেরা অ্যান্ড এন্টেরিক ডিজিজেস’র একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে বর্তমানে পজিটিভিটির হার ৫৫ শতাংশ।’
নারায়ণ চৌধুরী বলেন, ‘এমনকি গত বছর দুর্গা পূজার পর পজিটিভিটির হার ছিল ৩০ শতাংশ। এবার তা আগের বছরের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে।’
স্বাস্থ্য বিভাগের সূত্রে জানা গেছে, কলকাতা, উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা ও হাওড়াতে পজিটিভিটির হার অনেক বেশি রয়েছে। পাশাপাশি বর্ধমান, মালদা ও মুর্শিদাবাদেও পজিটিভিটির হার বেড়ে চলছে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।