চীনের করোনাভাইরাসের টিকা এখন বাংলাদেশে

নিজস্ব প্রতিবেদক

মে ১২, ২০২১, ০৬:৪২ পিএম

চীনের করোনাভাইরাসের টিকা এখন বাংলাদেশে

চীনের তৈরি পাঁচলাখ ডোজ করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন এখন ঢাকায়। সকালেই ওই ভ্যাকসিন বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ঢাকা-বেইজিং বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে চীন ওই উপহার ভ্যাকসিন পাঠাল। 

বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাংলাদেশ নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং আনুষ্ঠানিকভাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের কাছে উপহারের এই টিকা হস্তান্তর করেন। রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এই টিকা হস্তান্তর করা হয়।

Sinovac-cover
 চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের কাছে উপহারের এই টিকা হস্তান্তর করেন।

বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মাধ্যমে সরকার চীন থেকে আগামীতে আরও বেশি সিনোফার্ম ভ্যাকসিন আনেতে কাজ করছে বলে উপহার গ্রহণের প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

এর আগে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল, বিমানবাহিনীর বিশেষ ফ্লাইট এস-৩এজিএফ গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা ১২ মিনিটে করোনাভাইরাসের পাঁচ লাখ টিকা আনতে চীনের উদ্দেশে যাত্রা করে। এরপর বুধবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে সিনোফার্মের টিকা ও এডি সিরিঞ্জ নিয়ে রাজধানীর কুর্মিটোলায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ঘাঁটিতে অবতরণ করে উড়োজাহাজটি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের সব জনগোষ্ঠীকে ভ্যাকসিনেশনের আওতায় নিয়ে আসতে সর্বোচ্চ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জুন-জুলাইয়ের মধ্যে সিনোফার্ম ভ্যাকসিনের আরও ডোজ আনা যায় কিনা সে চেষ্টা করা হচ্ছে।

সিনোফার্মের ওই টিকা ঢাকায় পৌঁছায় বুধবার ভোর সাড়ে ৫ টায়। সেনানিবাসের বঙ্গবন্ধু বিমান ঘাঁটিতে অবতরণ করে ভ্যাকসিন নিয়ে আসা বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বিশেষ বিমান। পরে তেজগাঁওয়ে ইপিআই স্টোরে রাখা হয়েছে ভ্যাকসিনগুলো।

সিনোফার্ম এ ডোজগুলো বেইজিংয়ের ক্যাপিটাল ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে সরাসরি ঢাকায় নিয়ে আসা হলো বিমান বাহিনীর এ সি-ওয়ান থার্টি পরিবহন বিমানে করে।

পাঁচ লাখ টিকার সঙ্গে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সিরিঞ্জও পাঠিয়েছে সিনোফার্ম। তাদের দেওয়া বৈজ্ঞানিক তথ্য বলছে, এ ভ্যাকসিন করোনার বিরুদ্ধে ৭৯ শতাংশ কার্যকর। অ্যাস্ট্রাজেনেকার মতো এ টিকাও দুই ডোজ নিতে হবে।

এ ভ্যাকসিন মিশনে ছিলেন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ১৩ সদস্য। তারা জানান, বিশেষায়িত তাপমাত্রা রক্ষা করে উৎপাদকদের নির্দেশনা অনুযায়ী এসব ভ্যাকসিন পরিবহন করা হয়েছে।

উইং কমান্ডার হাবিব বলেন, কনটেইনারটা আসলে আমরা খুলে দেখিনি, তারা বলেছে কনটেইনারের মধ্যে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে ৭২ ঘণ্টা। ভ্যাকসিন গ্রহণের আনুষ্ঠানিকতায় যোগ দেন বিমান বাহিনী প্রধান, সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির পরিচালকসহ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাও।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর প্রহরায় ভ্যাকসিনগুলো পাঁচটি ফ্রিজারে করে বেলা ৯টার দিকে নেওয়া হয় তেজগাঁওয়ে ইপিআই এর স্টোরে। এ সময়, সতর্কতার সঙ্গে টিকার বক্সগুলো বুঝে নেয় কর্তৃপক্ষ। তারা বলছেন, অ্যাস্ট্রাজেনেকার মতো করেই এসব ভ্যাকসিন সংরক্ষণ করা হবে ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের (ইপিআই) প্রোগাম ম্যানেজার ডা. মওলা বক্স চৌধুরী বলেন, আমাদের যে কোর কমিটি এবং অন্যান্য কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে। অল্প সময়ের মধ্যে এটার প্রয়োগ শুরু করা হবে। সিনোফার্মের এসব টিকা প্রাথমিকভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য ক্ষুদ্র আকারে ব্যবহার করা হলেও শিগগিরই এসব ডোজ গণটিকা হিসেবে প্রয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

 

Link copied!