পড়শিদের অপমান সইতে না পেরে ধর্ষিতার আত্মহত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক

জানুয়ারি ৯, ২০২২, ১০:৫৮ পিএম

পড়শিদের অপমান সইতে না পেরে ধর্ষিতার আত্মহত্যা

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে ধর্ষণের অপমান সইতে না পেরে বিষপানে আত্মহত্যা করেছে নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী। এর আগে দীর্ঘ ১৭ দিন হাসপাতালে  মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) হেরে যায় উপজেলার যোগানিয়া ইউনিয়নের কুত্তামারা গ্রামের জোনাকি আক্তার নামে ওই শিক্ষার্থী।

নালিতাবাড়ী থানা পুলিশ ঘটনায় শনিবার (৮ জানুয়ারি) পুলিশ অভিযান চালিয়ে মূল অভিযুক্ত নাজমুলের দুই ভাই সুলতান মিয়া ও লাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে। পরে তাদের  আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

পুলিশ ও ধর্ষিতার পিতা আব্দুল জব্বার জানান, শেরপুর জেলা সদরের চান্দেরনগর গ্রামের জনৈক চাঁন মিয়ার ছেলে নাজমুল (২৮) কুত্তামারা গ্রামে ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটার কাজ করতো। গত ১৬ নবেম্বর রাত সাড়ে ১১টার দিকে আব্দুল জব্বার তার কন্যা জোনাকিকে ঘরে একা রেখে পাশের বাজারে চা পান করতে যান। এদিকে জোনাকির মা ঢাকার একটি পোষাক কারখানায় শ্রমিকের কাজ করেন বিধায় জোনাকিকে ঘরে একা পেয়ে অভিযুক্ত নাজমুল জোর করে ধর্ষণ করে। এতে জোনাকি কান্নাকাটি শুরু করলে নাজমুল পালিয়ে যায়। 

পরে ঘটনা জেনে জোনাকির বাবা পুলিশের আশ্রয় নিতে চাইলে স্থানীয় লোকজন তাতে বাঁধা দেয় এবং স্থানীয়ভাবে মীমাংসার উদ্যোগ নেয়। এ ঘটনা প্রকাশ পেলে কলঙ্ক হবে ভেবে আব্দুল জব্বার তাদের সিদ্ধান্ত মেনে নেন। একপর্যায়ে এ ঘটনা এলাকায় প্রকাশ হয়ে পড়লে জোনাকিকে ভঁৎসনা করে কথাবার্তা বলতে থাকে স্থানীয়রা।

এ অপমান সইতে না পেরে গত ২১ ডিসেম্বর জোনাকি বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। প্রথমে তাকে নালিতাবাড়ী ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় জোনাকির কিছুটা উন্নতি হলে তাকে বাড়ি নিয়ে আসা হয়। পরদিন আবারও অবস্থার অবনতি হলে পুনরায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল ৭ জানুয়ারি শুক্রবার জোনাকি মারা যায়।

এদিকে, এর আগেই গত ২ জানুয়ারী জোনাকির পিতা আব্দুল জব্বার বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে নাজমুলের দুই ভাই সুলতান মিয়া ও লাল মিয়াকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করে।

নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল গণমাধ্যমে জানান, মেয়ের পিতা আব্দুল জব্বার বাদী হয়ে ধর্ষণ মামলা দায়ের করার পর সহযোগি দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যেমে, কারাগারে পাঠানো হয়েছে।  প্রধান আসামিকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলেও তিনি জানান।  

Link copied!