বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ বন্ধ হচ্ছে না; রক্তক্ষরণ বন্ধে দেশে চিকিৎসা না থাকায় সমস্যা বেড়ে চলেছে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার (২৭ নভেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “দেশে উন্নত চিকিৎসা পদ্ধতি না থাকায় তার এই সমস্যা দিন দিন বাড়ছে। সরকারের দাম্ভিকতা আর প্রতিহিংসায় খালেদা জিয়া সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।”
খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসা করানোর জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবি জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “তাকে(খালেদা জিয়া) অ্যাডভান্সড সেক্টরে নেওয়া দরকার। যেখানে সেই ডিভাইসগুলো আছে, সেই টেকনোলজি আছে, যন্ত্রপাতিগেুলো আছে, সেখানে গেলে খালেদা জিয়ার যে রোগ তা সঠিকভাকে ধরতে পারবে।”
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহাসগর উত্তর শাখা বিএনপির আহবায়ক আমানুল্লাহ আমান, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন।
আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, “খালেদা জিয়া আপোষহীন নেত্রী।” অপরাধ না করেও কেন বিএনপি নেত্রীকে ক্ষমা চাইতে হবে সে প্রশ্ন রাখেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আমানুল্লাহ আমান কঠোর কর্মসূচির দাবি জানিয়ে মির্জা ফখরুলের উদ্দেশ্যে বলেন, “যদি খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠিয়ে চিকিৎসা না করা হয়,তাকে মুক্ত না করা হয়, মাননীয় মহাসচিব কর্মসূচি দিন, বাংলাদেশ চলবে না। বাংলাদেশ বন্ধ হয়ে যাবে।ঢাকার থেকে বাংলাদেশ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।”
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের গত ১২ অক্টোবর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করার জন্য রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয় খালেদা জিয়াকে। পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় পর গত ৭ নভেম্বর হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরেন তিনি। কিন্তু সপ্তাহ না ঘুরতেই শনিবার (১৩ নভেম্বর) তাকে আবার হাসপাতালে ভর্তি করার পর এখন সিসিইউতে রাখা হয়েছে।
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী আথ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, দাঁত, চোখের প্রদাহ, হৃদরোগসহ বয়সজনিত নানা জটিলতায় ভুগছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
গত ২৫ অক্টোবর ২৫ অক্টোবর শরীরের টিউমার ধরা পড়ায় খালেদা জিয়ার বায়োপসি করা হয়।ওইসময় বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানিয়েছিলেন খালেদা জিয়ার বায়োপসি রিপোর্টে ক্যান্সারের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।
দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হলে খালেদা জিয়াকে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে পাঠানো হয়। করোনার কারণে গত বছরের ২৫ মার্চ সরকার শর্ত সাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়। এখন পর্যন্ত চারবার খালেদা জিয়ার মুক্তির সময় বাড়ানো হয়েছে।