ভাষা আন্দোলনের ৭০ বছর পরও এর গৌরবময় ইতিহাস সেলুলয়েডের পর্দায় নেই বললেই চলে। নিয়মিত বাংলা সিনেমার দর্শকেরও আতশি কাচ দিয়ে ভাষা আন্দোলনের পটভূমি বা ইতিহাস নিয়ে চলচ্চিত্র খুঁজে পাবে না। ভাষা আন্দোলন নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য নির্মাতার পাশাপাশি দর্শক গড়ে ওঠেনি জানায় সংশ্লিষ্টরা।
দর্শক কম, তাই ঝুঁকি নেয়না কেউ
বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলন নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করার পর তার দর্শক গুটিকয়েক থাকে বলে দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে জানান বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান। তিনি আরও বলেন, ব্যবসায়ীক চিন্তা করলে ভাষা নিয়ে চলচ্চিত্রে বিনিয়োগ করবে না কেউ। তবে সরকারি অনুদানের পাশাপাশি ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করার একমাত্র উপায়।
মাত্র ৩ টি চলচ্চিত্র
ভাষ আন্দোলনের পটভূমি ও ইতিহাস আশ্রিত মাত্র তিনটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। এর মধ্যে জহির রায়হানের ‘জীবন থেকে নেয়া’ মুক্তি পায় স্বাধীনতার পূর্বে ১৯৭০ সালে। শহীদুল আলম খোকনের ‘বাঙলা’ ও তৌকির আহমেদের ‘ফাগুন হাওয়া’ স্বাধীন বাংলাদেশে ভাষা আন্দোলনের পটভূমি নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র।
নির্মাণ না হওয়া চলচ্চিত্র
১৯৬৫ সালে জহির রায়হান ভাষা আন্দোলনের পটভূমিতে ২১শে ফেব্রুয়ারি নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণের ঘোষণা দেন। তাঁর কাহিনি অনুসারে চিত্রশিল্পী মুর্তজা বশীর চিত্রনাট্যও নির্মাণ করেন। তা এফডিসিতে জমা দেওয়ার পর পুরোটা ভেস্তে দেয় পাকিস্তান সরকার। পরবর্তী সময়ে জহির রায়হানের স্ত্রী ও অভিনেত্রী সুচন্দা চলচ্চিত্রটি নির্মাণের উদ্যোগ নিলেও সেই চিত্রনাট্যটি আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে সুচন্দা বলেন, ভাষা আন্দোলন নিয়ে চলচ্চিত্র চাইলেও যে কেউ বানাতে পারবে না। সেই মানসিকতা ও মেধার লোক এখন নেই। আর বর্তমানে সাধারণ ছবিই নির্মাণ করা হয় না, ভাষা আন্দোলন নিয়ে কা করবে কে?
ভাষা আন্দোলন নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র
ভাষা আন্দোলনের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্রগুলোর মধ্যে মস্কো চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কারপ্রাপ্ত রফিক উদ্দিন আহমেদ পরিচালিত হৃদয়ে একুশ, শবনম ফেরদৌসী নির্মিত ভাষা জয়িতা, রোকেয়া প্রাচীর বায়ান্ন’র মিছিল প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।