মার্চ ৩, ২০২৩, ১২:৫৭ পিএম
বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক অবস্থা গত বছরের তুলনায় আরও খারাপ হয়েছে। উদার গণতান্ত্রিক সূচক ও নির্বাচনভিত্তিক গণতন্ত্রের সূচকে গতবারের তুলনায় দেশটির অবস্থান এক ধাপ পিছিয়েছে। সুইডেনভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ভ্যারাইটিজ অব ডেমোক্রেসির (ভি-ডেম) রিপোর্টে এ তথ্য উঠে এসেছে। ভি-ডেমের রিপোর্টে উদার গণতান্ত্রিক সূচকে শীর্ষ তিন স্থানে আছে যথাক্রমে ডেনমার্ক, সুইডেন ও নরওয়ে।
বৃহস্পতিবার রিপোর্টটি প্রকাশিত হয়। রিপোর্টটির শিরোনাম ‘ডিফাইঅ্যান্স ইন দ্য ফেস অব অটোক্রাটাইজেশন’। সাত বছর ধরে বৈশ্বিক শাসনব্যবস্থা নিয়ে ‘গণতন্ত্র প্রতিবেদন’ প্রকাশ করে আসছে সুইডেনের গোথেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভি-ডেম ইনস্টিটিউট।
এবারের রিপোর্টে বলা হয়েছে, উদার গণতান্ত্রিক সূচকে (লিবারেল ডেমোক্রেসি ইনডেস্ক) ১৭৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৭তম। স্কোর শূন্য দশমিক ১১। গতবারের চেয়ে স্কোর কমেছে শূন্য দশমিক ০২। আগেরবার বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৪৬তম।
রিপোর্টে ‘নির্বাচনভিত্তিক গণতন্ত্রের সূচকে’ (ইলেকটোরাল ডেমোক্রেসি ইনডেক্স) বাংলাদেশের অবনমন হয়েছে। সূচকে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান ১৩১তম। স্কোর শূন্য দশমিক ২৮। স্কোর কমেছে প্রায় শূন্য দশমিক ০৩। আগেরবার অবস্থান ছিল ১৩৫তম।
লিবারেল (উদার) কম্পোনেন্ট ইনডেস্কে বাংলাদেশের অবস্থান ১৫৫তম। ইগলিট্যারিয়ান (সমতা) কম্পোনেন্ট ইনডেস্কে ১৬৫তম। পার্টিসিপেটরি (অংশগ্রহণমূলক) কম্পোনেন্ট ইনডেস্কে ১৪২তম। ডেলিবারেটিভ (সিদ্ধান্তমূলক) কম্পোনেন্ট ইনডেস্কে বাংলাদেশ ১৪৫তম অবস্থানে আছে।
শাসনতান্ত্রিক দিক থেকে বাংলাদেশ আছে ‘নির্বাচনভিত্তিক স্বেচ্ছাতন্ত্র’ (ইলেকটোরাল অটোক্রেসি) বিভাগে। এর অর্থ হলো এ দেশে গণতন্ত্র অপস্রিয়মাণ। আর সে জায়গায় ধীরে ধীরে স্থান করে নিচ্ছে স্বেচ্ছাচারী শাসন। বাংলাদেশের অবস্থান আগের প্রতিবেদনেও এমনটাই ছিল।
বাংলাদেশের প্রতিবেশী ভারতও আছে ‘নির্বাচনভিত্তিক স্বেচ্ছাতন্ত্র’ বিভাগে। ভারতের গণতান্ত্রিক পরিস্থিতিরও অবনতি হয়েছে। উদার গণতান্ত্রিক সূচকে ভারতের অবস্থান ৯৭তম। নির্বাচনভিত্তিক গণতন্ত্রের সূচকে ১০৮তম। উভয় ক্ষেত্রে ভারতের অবনমন ঘটেছে।
রিপোর্টে বলা হয়, ২০২২ সাল নাগাদ বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৭২ শতাংশ স্বেচ্ছাতন্ত্রের মধ্যে ছিল। ১০ বছর আগে তা ছিল ৪৮ শতাংশ। আর বিশ্বের মোট জনসংখ্যার মাত্র ১৩ শতাংশ উদার গণতন্ত্রে বাস করে। উদার গণতান্ত্রিক দেশের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৩২।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২২ সালে ৩৫টি দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অবনতি ঘটেছে। গণমাধ্যমের ওপর সরকারি সেন্সরশিপ বেড়েছে ৪৭টি দেশে। সুশীল সমাজের সংগঠনগুলোর ওপর সরকারি দমন-পীড়ন বেড়েছে ৩৭টি দেশে।