বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং বড় আকারের ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। ফলে ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাব অনেক বেশি হতে পারে। এ জন্য তারা তিনটি কারণের কথা বলছেন। কারণ তিনটি হলো ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ, অমাবস্যা তিথি ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্য।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. আবদুল মান্নান এই কারণ তিনটির ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
আবদুল মান্নান বলেন, প্রথমত, সিত্রাংয়ের অগ্রবর্তী অংশের আচরণ দেখে ঘূর্ণিঝড়টির সম্ভাব্য প্রবল প্রভাবের বিষয়টি আঁচ করা যাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়টির মূল শরীর এখনো দূরে সাগরের দিকে আছে। যখন মূল শরীর সামনের উপকূলে ভূমির দিকে আসবে, তখন পরিস্থিতি আরও নাজুক হতে পারে।
দ্বিতীয়ত, ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে আঘাত হানার সময় অমাবস্যা থাকবে। অমাবস্যার সময় চন্দ্র ও সূর্য একই দিক থেকে পৃথিবীকে আকর্ষণ করে। যার কারণে পৃথিবীর বুকে যে জলভাগ আছে, তাঁর ওপর অতিরিক্ত আকর্ষণ তৈরি হয়। এতে জলভাগ উত্তাল হয়ে পড়ে।
তৃতীয়ত, এবার বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্য লক্ষ করা যাচ্ছে। এ কারণে এবারের পরিস্থিতি অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ। বায়ুচাপের এই পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে বায়ুমণ্ডলে এক ধরনের চাপ সৃষ্টি হয়, যা জলভাগের ওপরও চাপ তৈরি করে।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এখন বাংলাদেশ উপকূলমুখী। ঘূর্ণিঝড়টি আজ সোমবার সকাল আটটা নাগাদ চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে; কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে; মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।
ইতিমধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় ঝোড়ো হাওয়াসহ প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় পাঁচ থেকে আট ফুটের বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. হাফিজুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেছেন, ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তাঁর কাছাকাছি বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা বা ঝোড়ো বাতাস বয়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।