এপ্রিল ৮, ২০২৩, ১১:৫৫ এএম
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেল নির্মিত র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে তথ্যচিত্রটি নিজেদের ফেসবুক পেইজে শেয়ার করেছে ঢাকায় অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস। শুধু তাই নয়, গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ওই তথ্যচিত্র ও বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের উপ-প্রধান মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল যে জবাব দিয়েছিলেন তা-ও যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের ফেসবুক পেজে শেয়ার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের ওই ব্রিফিংয়ে ডয়চে ভেলের তথ্যচিত্রের প্রসঙ্গ তুলে ধরে এক বাংলাদেশি সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিল-র্যাবের ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কথা মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবেচনা করছে কিনা?
বাংলাদেশি ওই সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় বংশোদ্ভূত বেদান্ত প্যাটেল বলেন, “আমি এখান থেকে কোনো ব্যবস্থার পূর্বাভাস দেখতে যাচ্ছি না। তবে ওই নিবন্ধ ও ভিডিওতে যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে, সেগুলো আমরা খুব সতর্কতার সঙ্গে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করব। আর আমরা আশা করব, বাংলাদেশ সরকারও তা-ই করবে।”
যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট-এর উপ-প্রধান মুখপাত্র আরও বলেন, ‘তবে বিশদভাবে বলতে হলে বলব, মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।’
আসছে সোমবার ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের সাথে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের বৈঠকের আগেই যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট ওই মন্তব্য করলো। প্রসঙ্গত, মোমেন-ব্লিনকেনের বৈঠকে র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি পুনর্ব্যক্ত করবে বাংলাদেশ।
ডয়চে ভেলে ও নেত্র নিউজের এক ‘যৌথ অনুসন্ধানী তথ্যচিত্রে’ র্যাবের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে তাকে ‘হাসির খোরাক’ বলে মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, “এটি হাসির খোরাক ছাড়া আর কী! তারা (র্যাব) রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে না। নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে র্যাব।”
র্যাব নিয়ে ডয়েচে ভেলে ও নেত্রনিউজের প্রতিবেদনের বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার (৬ এফ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়রের মুখপাত্র ও জনকূটনীতি অনুবিভাগের মহাপরিচালক সেহেলী সাবরীনও বলেন, “র্যাব দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে কাজ করে। কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য র্যাবকে ব্যবহার করা হচ্ছে না। এ ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত।”
প্রসঙ্গত, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। ওই নিষেধাজ্ঞার পর পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে বলেও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা মন্তব্য করেছেন। গত জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু ঢাকা সফরকালে বলেছেন, নিষেধাজ্ঞার বার্ষিকীতে সাধারণত নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় তা হয়নি “ তবে ডয়চে ভেলের তথ্যচিত্রটি র্যাবের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের পুরনো অভিযোগ নতুন করে তুলে এনেছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।