জানুয়ারি ২২, ২০২২, ০১:৩৭ পিএম
সরকারি নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে বরখাস্তকৃত সরকারি কর্মকর্তা ও তিন শিক্ষার্থীসহ চক্রের ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার দুপুর ৩টা থেকে রাত আনুমানিক ১০ পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- নোমান সিদ্দিকী, মাহমুদুল হাসান আজাদ, আল আমিন রনি, নাহিদ হাসান, শহীদ উল্লাহ, তানজির আহমেদ, মাহবুবা নাসরীন রুপা, রাজু আহমেদ, হাসিবুল হাসান ও রাকিবুল হাসান। এদের মধ্যে মাহমুদুল হাসান আজাদ হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয় (সিজিএ) অফিসের বরখাস্তকৃত সরকারি কর্মকর্তা এবং মাহবুবা নাসরীন রূপা বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান।
শনিবার দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার এসব তথ্য জানা।
গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ইয়ার ডিভাইস ছয়টি, মাস্টার কার্ড মোবাইল সিম হোল্ডার ছয়টি ব্যাংকের চেক পাঁচটি, নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প সাতটি, স্মার্ট ফোন ১০টি, বাটন মোবাইল ছয়টি, প্রবেশপত্র ১৮টি ও চলমান পরীক্ষার ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র তিন সেট জব্দ করা হয়।
এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশ কাকরাইলের নিউ শাহিন হোটেল থেকে অসাধু উপায় অবলম্বনকারী দুইজন পরীক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে। তাদের দেয়া তথ্যমতে কাফরুল সেনপাড়া পর্বতা এলাকার একটি অ্যাপার্টমেন্ট থেকে ডিভাইস, প্রশ্নপত্র ও উত্তর পত্রের খসড়াসহ চার জনকে গ্রেপ্তার করে। ডিবি পুলিশের অপর দল বিজিপ্রেস উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে পরীক্ষার্থী এবং অন্যতম পরিকল্পনাকারী মাহবুবা নাসরীন রূপাকে টাকা, ডিজিটাল ডিভাইসসহ গ্রেপ্তার করে। পরবর্তীতে তার দেয়া তথ্যমতে অপর আসামিদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, প্রতিরক্ষা মহা হিসাব নিরীক্ষকের কার্যালয়ের ডিফেন্স ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্টের ৫৫০টি অডিটর পদে নিয়োগের জন্য শুক্রবার দুপুর ৩টা থেকে বিকেল শোয়া ৪টা পর্যন্ত ৭০ নাম্বারের এমসিকিউ পরীক্ষা ঢাকার বিভিন্ন এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হলগুলোতে অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা মহানগর ডিবি পুলিশের কাছে তথ্য ছিল এর আগেও বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার হওয়া কয়েকজন ইলেকট্রনিক ডিভাইস, মোবাইল অ্যাপস এবং ব্যক্তি পরিবর্তন করে পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস, উত্তর সমাধান করে সরবরাহ করতে পারে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে তাদের গ্রেপ্তার গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের মধ্যে মাহমুদুল হাসন আজাদ, নাহিদ হাসান, অল আমিন সিদ্দিকী আগেও প্রশ্নপত্র ফাঁস করে ২০১৩, ২০১৬ এবং ২০১৯ সালে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা অন্যান্য আসামিদের যোগসাজশে বিভিন্ন সোশ্যাল অ্যাপস ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে পরীক্ষা হল থেকে প্রশ্ন ফাঁস করে দেয়া, বাইরের রুমে ওয়ানস্টপ সমাধান কেন্দ্র বসিয়ে স্মার্ট ওয়াচ, এয়ার ডিভাইস, মোবাইল এসএমএস এর মাধ্যমে উত্তর সরবরাহ করার কাজ করতো।