যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেছেন, “মানুষ যখন সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যা নিয়ে শঙ্কিত আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ যখন বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে ঠিক সেই মুহূর্তেই বিএনপি-জামাত বন্যার্ত মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে পদ্মা সেতু নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। অপরাজনীতিতে মেতেছে তারা। আমি আপনাদের বলতে চাই যারা এদেশকে নিয়ে, সাধারণ মানুষকে নিয়ে, বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে তাদের সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে হবে।”
রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র নির্দেশে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির শুভ উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, ৫ জুন প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও ‘জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ২০২২’ উদ্বোধন করেছেন। ইতোমধ্যে যুবলীগের অনেক শাখা বৃক্ষরোপণ শুরু করে দিয়েছে সপ্রনদিতভাবে। আমি তাদেরকে সাধুবাদ জানাই। এখনি বৃক্ষরোপণের উপযুক্ত সময় আষাঢ়, শ্রবণ এবং ভাদ্র। তবে এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নির্দেশে পরিবেশ সুরক্ষায় যুবলীগ সর্বদা মাঠে থাকবে। আগামী প্রজন্মের টেকসই বাংলাদশে এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য বৃক্ষরোপণ, তথা উন্নত প্রাকৃতির পরিবেশের কোন বিকল্প নাই।
বৃক্ষরোপন কর্মসূচি উদ্বোধন করেন শেখ ফজলে শামস্ পরশ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলী'র সদস্য আলহাজ্ব এ কে এম রহমত উল্লাহ এমপি। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন। সঞ্চালনা করেন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
সিলেট ও সুনামগহ্ঝে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর কথা জানিয়ে যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, সরকারের সংশ্লিষ্ট সব বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানকে একযোগে কাজ করতে হবে। যেটা সরকার করছে, কিন্তু এগিয়ে আসতে হবে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর এবং জনপ্রতিনিধিদের। আমরা যুবলীগের সকল স্তরের নেতাকর্মীদের বন্যার ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি যুবলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা ও জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের ও আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটা বিরাট হুমকি। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা আমাদের সবার জন্য একটা বিরাট প্রতিবন্ধকতা। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেশব্যাপী সংগঠনের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের অন্তত একটি করে ফলজ, বনজ ও ঔষধি বৃক্ষরোপণের আহ্বান জানাচ্ছি। বৃক্ষ শুধু আমাদের পুষ্টিই প্রদান করবেনা, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিও আনয়ণ করবে।
তিনি বিএনপি-জামাতের উদ্দেশ্যে বলেন, যা কিছু বঙ্গবন্ধুকন্যা করে যাচ্ছেন সবকিছু আমাদের নতুন প্রজন্মের উন্নত ভবিষ্যতের জন্য। একদিকে তিনি পদ্মা সেতু নির্মাণ করে যোগাযোগ এবং অবকাঠামো উন্নয়ন ক্ষেত্রে যুগান্তকারী মাইলফলক সৃষ্টি করেছেন, অদ্যদিকে তিনি পরিবেশ উন্নয়নেও সারা বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা আত্মকেন্দ্রিক, বর্তমান নির্ভর রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন না, তিনি সুদূরপ্রসারী ও সার্বজনীন রাজনীতির পথিকৃৎ। অপরদিকে তথাকথিত বিরোধী দল, বিএনপি-জামাত নেতারা তাদের সঙ্কীর্ণ এবং আত্মকেন্দ্রিক ভোগের রাজনীতি ছাড়তে পারছে না। তাই তাঁরা পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা দখলের রাজনীতি করে যাচ্ছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলী'র সদস্য আলহাজ্ব এ কে এম রহমত উল্লাহ এমপি বলেন, গুলশান, বাড্ডা, ক্যান্টনমেন্ট এই তিনটি থানার ১০ টি ওয়ার্ডে পরিবেশ সুরক্ষায় ১০ হাজার গাছ উপহার দেব। তিনি বলেন, আমাদের এই দিকে গাছ লাগানোর প্রচুর জায়গা আছে।
আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, আজকে যে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ সেটি আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৮৩ সালের পহেলা আষাঢ় থেকে পালন করে আসছেন। তিনি বলেন, যে কোন পরিপ্রেক্ষিতেই দুর্যোগকালীন সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ান প্রথম কাজ। তবে বেশির ভাগ দুর্যোগে পরিবেশের দায় রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম নদী দখল, দুর্ষণ, শিল্প প্রতিষ্ঠানের বর্জ, জমিতে অতিরিক্ত সার প্রয়োগ, ইটের ভাটায় অতিরিক্ত টপসয়েলের ব্যবহার যা মাটির উর্বরতা নষ্ট করে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন-যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাড. মামুনুর রশীদ, মোঃ হাবিবুর রহমান পবন, ড. সাজ্জাদ হায়দার লিটন, মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন, ইঞ্জি. মৃনাল কান্তি জোদ্দার, তাজউদ্দিন আহম্মেদ, মোঃ আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সুব্রত পালসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।