বেটা
আগস্ট ২০, ২০২২, ০২:৩১ পিএম
পোল্ট্রি খাতের বৃহৎ কোম্পানিগুলো বাচ্চা, ডিম ও মুরগির দাম বাড়িয়ে ভোক্তা ও ক্ষুদ্র খামারিদের কাছ থেকে ৫২০ কোটি টাকা লুটে নিয়েছে। গত ১৫ দিনে তারা ওই টাকা হাতিয়ে নেয়। দেশের এই পোল্ট্রি খাতটি এখন মাফিয়া চক্রের হাতে চলে গেছে। আর এই মাফিয়া চক্রে জড়িত রয়েছে পোল্ট্রি খাতের ১০-১২ টি দেশি-বিদেশি কোম্পানি।
শনিবার রাজধানীতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পোল্ট্রি খাতের ক্ষুদ্র খামারিদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন’নেতারা এমন অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে নেতারা বলেন, কোম্পানিগুলো গত ১৫ দিনে ডিমের দাম বাড়িয়ে বাড়তি মুনাফা করেছে ১১২ কোটি টাকা। পাশাপাশি বাচ্চার দাম বাড়িয়ে লুটে নিয়েছে ২৩৪ কোটি টাকা। ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়িয়ে লুটে নিয়েছে ১৭২ কোটি টাকা।
সংবাদ মম্মেলনের আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার লিখিত বক্তব্যে বলেন, “দেশে পোল্ট্রি খাতটি এখন মাফিয়া চক্রের হাতে চলে গেছে। কাজী ফার্মস, প্যারাগন, সিপি, নারিশ, ৭১, আফিল, সাগুনাসহ ১০ থেকে ১২টি বড় কোম্পানি যৌথভাবে এই মাফিয়া চক্র তৈরি করেছে। চক্রটি সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে সারাদেশে প্রান্তিক খামারিদের ধ্বংস করতে চাইছে। এরই মধ্যে তাদের পরিকল্পিত চক্রান্তে সারাদেশে প্রায় অর্ধেক প্রান্তিক খামার বন্ধ হয়ে গেছে।”
সুমন হাওলাদার জানান, বর্তমানে এক বস্তা ফিড প্রান্তিক খামারিকে কিনতে হলে লাগে ৩৩০০ টাকা, কিন্তু কোনো খামারি তাদের সঙ্গে কন্ট্রাক্ট ফার্মিং করলে ওই বস্তা পাওয়া যায় ২৫০০ টাকায়। অর্থাৎ তারা বস্তা প্রতি ফিডে লাভ করছে ৮০০ টাকা। তারা প্রতিটি ডিমে লাভ করছে তিন টাকা এবং প্রতিটি ব্রয়লারের বাচ্চা বিক্রি করে লাভ করছে ২০ থেকে ২২ টাকা।
দেশে প্রতিদিন ডিমের চাহিদা সাড়ে চার কোটি পিস উল্লেখ করে সুমন হাওলাদার লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, “ এর মধ্যে বড় কোম্পানিগুলোই এই চাহিদার আড়াই কোটি সরবরাহ করে। প্রতি ডিমে তিন টাকা করে বেশি নিয়ে প্রতিদিন সাত কোটিরও বেশি টাকা তারা অবৈধভাবে লাভ করেছে। এভাবে গত ১৫ দিনে বড় কোম্পানিগুলো ডিমের বাজার থেকে ১১২ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ অন্যদিকে দেশের ব্রয়লার মুরগির সরবরাহ কমিয়ে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে। এভাবে প্রতিদিন ১৯ কোটি ৫০ লাখ কেজি মজুত সংকট তৈরি করে এবং পরবর্তীতে তা ছেড়ে প্রতি কেজিতে বাড়তি নিয়েছে ১৫ টাকা। এর মাধ্যমে গত ১৫ দিনে তারা ১৭২ কোটি টাকার বেশি ভোক্তার পকেট কেটেছে। এছাড়া প্রতিদিন এক কোটি ৩০ লাখ বাচ্চা বিক্রি থেকে গত ১৫ দিনে ২৩৪ কোটি টাকা অবৈধ মুনাফা করেছে।
মুরগি ও ডিমের দাম আড়তে নির্ধারণ হয় না উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, ‘সারাদেশে আড়ৎগুলোয় বড় কোম্পানির লোক থাকে। কোম্পানিরা যে দাম নির্ধারণ করতে বলে আড়তগুলোতে সেই দামই নির্ধারণ হয়ে থাকে।’
তিনি বলেন, এই প্রক্রিয়া দেশের ভোক্তাদের জন্য শুভ নয়। এতে প্রান্তিক খামারিরা অস্তিত্ব সংকটে পড়বে এবং প্রতিটি ডিম ২০ টাকায় খেতে হবে। আর ব্রয়লার মুরগি খেতে হবে ৪০০ টাকা কেজিতে। বড় কোম্পানিগুলো সেই নীলনকশা ধরেই এগুচ্ছে। তাদের এই চক্রান্তে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা মদদ দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন অ্যাসোসিয়েশন নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. ইলিয়াস খন্দকার, সহ-সভাপতি বাপ্পি কুমার দেব উপস্থিত ছিলেন।
-20241121105543.jpg)
-20241027115010.png)
