মে ১৫, ২০২৩, ০৪:০৬ পিএম
নির্বাচন স্বচ্ছ হচ্ছে কি না এই বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, স্বচ্ছতার সার্টিফিকেট আমি তো প্রশাসন থেকে নেব না, মিডিয়া থেকে নেব, তাই গাজীপুরে বলে এসেছি আইন-শৃঙ্খলা বৈঠকে মিডিয়াকে যেন কোনো বাধা দেওয়া না হয়। আমরা মিডিয়ার ভূমিকাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে থাকি।
সোমবার (১৫ মে) জাতীয় পার্টির একটি প্রতিনিধিদলের সাথে বৈঠকের পর তিনি এমন মন্তব্য করেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরও জানান, সভাটা অনেকটা সৌজন্যমূলক ও নির্বাচন বিষয়ক। উনারাই সাক্ষাৎ চেয়েছিলেন।
পাঁচ সিটিতে সুষ্ঠু ভোটের শঙ্কা করছে জাপা জানিয়ে সিইসি বলেন, আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর সরকারের তরফ থেকে কোনো নির্বাচনে হস্তক্ষেপ পাইনি। এটি হচ্ছে জাতীয় নির্বাচনের জন্য প্রশাসনের যে সহায়তা এখন পর্যন্ত যা পেয়েছি উনারা যদি একটা নিউট্রাল অবস্থানে থাকেন তাহলে আমাদের পক্ষে নির্বাচন ভালোভাবে করা সম্ভব হবে। আমাদের তরফ থেকে সরকারের ওপর চাপটা থাকবে। নেগেটিভ কোনো বিষয় যদি আমরা দেখি যে ঐক্যমত হয়েছে, তাহলে আমরা বিষয়টি দেখব।
সিইসি আরও বলেন, জাপার মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা জানিয়ে বলেছেন উনারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। এজন্য উনাদের ধন্যবাদ দিয়েছি। আমরা বলেছি নির্বাচনটা যতটা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে ততই অধিকতর অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে। নির্বাচনটা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হওয়া বাঞ্ছনীয়। এর মাধ্যমেই নির্বাচনে এক ধরনের ভারসাম্য গড়ে ওঠে, যার ফলে কাঙ্ক্ষিত অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন তার উদ্দেশ্য অনেকটা অর্জিত হয়ে থাকে।
সরকারি দলের প্রার্থীরাই আচরণবিধি লঙ্ঘন করছে বেশি চুন্নুর এ কথার প্রসঙ্গে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, অসংখ্য আচরণবিধি লঙ্ঘন হবে। সবকিছু আমলে নেওয়ার মতো হবে না। কারণ হচ্ছে লোম বাছতে গিয়ে যদি কম্বল উজাড় করে ফেলি সেটা খুব বাস্তব হবে না। আমি বলেছি, দিন শেষে মানুষ যেটা জানবে যে নির্বাচনটা কেমন হলো।
নির্বাচন কমিশন এককভাবে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবেন না জানিয়ে সিইসি বলেন, নির্বাচনটা ভালো হবে এটা আমরা দৃশ্যমান করতে চাচ্ছি। আমরা আশাবাদী সরকারের সদিচ্ছা থাকবে এবং মহাসচিবকে বলেছি প্রতিদ্বন্দ্বিতা আপনাদের করতে হবে। ভালোভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করেন তাহলেও নির্বাচনের শুদ্ধতা বিঘ্নিত হতে পারে।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ইভিএমে সংসদ নির্বাচন হচ্ছে না, এতে উনারা খুশি। তবে এতে অনেক কিছু আছে বলেছে, আমরা তা মেনে নিইনি। আমরা বলেছি, তাহলে ১৮ সালের নির্বাচনে কোনো অনিয়ম হয়নি। কারণ সেটা ইভিএমে নয়, ব্যালটে হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, ব্যালটে নির্বাচন হলে কোনো অনিয়ম হবে না। যেমন ১৮ সালেও হয়নি, আগামীতেও হবে না। ব্যালটে হোক আর ইভিএমে হোক আমরা চেষ্টা করবো নির্বাচনটা যাতে শুদ্ধ হয়।
পুলিশের ভূমিকার কথা উনারা বলেছেন পুলিশকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কারণ পুলিশ সরকারিভাবে এটা করে না। স্থানীয়ভাবে যে নির্বাচন হয়, সেখানে পুলিশকে পক্ষাশ্রীত করার জন্য প্রার্থীরাই চেষ্টা করে থাকে। সেখানে পুলিশকে কীভাবে নিউট্রোলাইজ করা যায়, সেজন্য উনারা আমাদের সহায়তা চেয়েছেন। আমরা বলেছি, আমরা চেষ্টা করবো এবং সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করবে, সেটা সরকারকেও করতে হবে।
এর আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে জাতীয় পার্টি মহাসচিবের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির প্রতিনিধি দল সভা করেন। সভায় নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান এবং নির্বাচন কমিশনের সচিব মো. জাহাংগীর আলম উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় পার্টি মহাসচিবের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, ভাইস চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন ভূইয়া, দপ্তর সম্পাদক-২ এম এ রাজ্জাক খান প্রমুখ।