ছবি: সংগৃহীত
গত বছরের আগস্ট থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ১১ মাসে দেশে ৪৭১টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় মোট ১২১ জন নিহত এবং ৫ হাজার ১৮৯ জন আহত হয়েছেন। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
টিআইবি জানায়, এসব রাজনৈতিক সহিংসতার ৯২ শতাংশের সঙ্গে বিএনপি, ২২ শতাংশের সঙ্গে আওয়ামী লীগ, ৫ শতাংশের সঙ্গে জামায়াত এবং ১ শতাংশের সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টি জড়িত ছিল।
সোমবার, ০৪ আগস্ট টিআইবির নিজস্ব মিলনায়তনে ‘স্বৈরাচারী সরকারের পতনের এক বছর: প্রত্যাশা ও অর্জন’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন সংস্থাটির গবেষক শাহজাদা আকরাম ও জুলকারনাইন।
গবেষণা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীরা চাঁদাবাজি, পরিবহন টার্মিনাল দখল এবং ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার মতো কর্মকাণ্ডেও জড়িত ছিল।
গবেষক জুলকারনাইন বলেন, ‘আমরা অনেক রাজনৈতিক দলের মধ্যে আইনের প্রতি শ্রদ্ধার অভাব দেখতে পেয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলার অভাব রয়েছে। এ কারণে তারা অপকর্মে জড়িত নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে না।’
অন্যদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মধ্যেও এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার প্রবণতা রয়েছে বলে মন্তব্য করেন জুলকারনাইন। তিনি যোগ করেন, ‘আমরা দলীয় লোকদের মধ্যে তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রবণতাও দেখেছি।’
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কারের জন্য বহু উদ্যোগ নিলেও তার অনেকগুলোই অ্যাডহক বা সাময়িক প্রকৃতির এবং বাস্তবায়নের জন্য কোনো সুস্পষ্ট রূপরেখা নেই। তিনি আরও বলেন, অনেক ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের চাপের কারণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হয়েছে।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আমরা দেখেছি যে একেবারে নতুন গঠিত একটি রাজনৈতিক দল, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর কিছু সদস্য দুর্নীতি ও স্বার্থের সংঘাতে জড়িত ছিলেন। সুতরাং, আমরা বলতে পারি যে আমরা একটি স্বৈরাচারী শাসনের অবসান ঘটিয়েছি, কিন্তু স্বৈরাচারী ব্যবস্থাকে উপড়ে ফেলার জন্য যা যা করা প্রয়োজন, তা যথেষ্ট করছি না।