খাদিজার মুক্তি দাবি করল অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগস্ট ২৮, ২০২৩, ০৮:১৬ পিএম

খাদিজার মুক্তি দাবি করল অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল

সংগৃহীত ছবি

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কারাবন্দী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরার অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

খাদিজাকে বিচার ছাড়া কারাবন্দী রাখার এক বছর পূর্তিতে সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক অন্তর্বর্তীকালীন উপ-আঞ্চলিক পরিচালক নাদিয়া রহমান এ দাবি জানান। সোমবার (২৮ আগস্ট) সংস্থাটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে নাদিয়া রহমান বলেন, “বছরব্যাপী কারাভোগ এবং খাদিজার জামিনের বারবার প্রত্যাখ্যান বাংলাদেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারের একটি প্রতারণা এবং স্পষ্ট লঙ্ঘন। তার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে হবে, তার ডিগ্রির জন্য পড়াশোনা করতে হবে। সমালোচনামূলক কথার জন্য তাকে নির্বিচারে আটক করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন নাদিয়া।

তিনি বলেন, “সরকারের কঠোর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের সিদ্ধান্ত সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ মানবাধিকারকে ক্ষুণ্ণ করতে এবং সমালোচক ও অ্যাক্টিভিস্টদের নিপীড়ন করতে আইনটি ব্যবহার করে চলেছে। খাদিজাসহ যারা নির্বিচারে বাংলাদেশে আটক আছেন, তাদের সবাইকে অবিলম্বে ও নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। এছাড়া খাদিজার মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত তাকে নিয়মিত পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা দিতে হবে এবং তাকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন অবস্থায় রাখা উচিৎ।’

খাদিজা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। অনলাইনে সরকারবিরোধী বক্তব্য প্রচারসহ দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের অভিযোগে ২০২০ সালের অক্টোবরে খাদিজা ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রাজধানীর কলাবাগান ও নিউমার্কেট থানায় দুটি মামলা করে পুলিশ। দুটি মামলার এজাহারও প্রায় একই।

এজাহারে বলা হয়েছে, বাদী ২০২০ সালের ১১ অক্টোবর মেজর দেলোয়ার হোসেনের ইউটিউব চ্যানেলে ‘হিউম্যানিটি ফর বাংলাদেশ’ শিরোনামে এক ভিডিও দেখতে পান। সেখানে সঞ্চালক খাদিজাতুল কুবরার উপস্থাপনায় অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেলোয়ার হোসেন তার বক্তব্যে বাংলাদেশ সরকারকে উৎখাতের বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করেন।

২০২২ সালে এই দুই মামলায় আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করে পুলিশ। পরে অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল খাদিজা ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেলোয়ারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এরপর গত বছরের ২৭ আগস্ট মিরপুরের বাসা থেকে খাদিজাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সঞ্চালক খাদিজা গ্রেপ্তার হলেও মেজর দেলোয়ার এখনো বিদেশে অবস্থান করছেন। বিচারিক আদালতে একাধিকবার খাদিজার জামিন আবেদন নাকচ হয়। পরে তিনি হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি তাকে জামিন দেন হাইকোর্ট। পরে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে গত ১০ জুলাই আপিল বিভাগ ওই আদেশ চার মাসের জন্য মুলতবি রাখেন।

অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে বলা হয়, এরপর থেকে খাদিজার জামিনের আবেদন বেশ কয়েকবার প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। কিডনি সমস্যাসহ চিকিৎসাজনিত সমস্যা দেখা দেওয়া সত্ত্বেও পরিবার এবং গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে- খাদিজাকে চলতি বছরের শুরুতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের জন্য সংরক্ষিত একটি সেলে স্থানান্তর করা হয়েছিল। ২০২৩ সালের ১০ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তার জামিন শুনানি চার মাসের জন্য স্থগিত করেন।

Link copied!