সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের পরেও কোটাবিরোধী আন্দোলন অযৌক্তিক: ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই ১২, ২০২৪, ০৮:০০ পিএম

সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের পরেও কোটাবিরোধী আন্দোলন অযৌক্তিক: ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের

সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের পরেও কোটাবিরোধী আন্দোলন অযৌক্তিক বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

শুক্রবার (১২ জুলাই) এক বিবৃতিতে এই মন্তব্য করেন তিনি। ওবায়দুল কাদের বলেন, “সরকারি চাকরিতে কোটা সংরক্ষণ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রায়ের ওপর ৪ সপ্তাহের স্থিতাদেশ দিয়েছে আপিল বিভাগ। আপিল বিভাগের এই আদেশের পরে হাইকোর্ট বিভাগের রায়ের কোনও কার্যকারিতা বর্তমানে নেই। এরপরও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলমান থাকার যৌক্তিকতা নেই।”

এই আন্দোলনের ওপর মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি ভর করেছে বলে অভিযোগ তুলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কাছে প্রশ্ন তুলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “শিক্ষার্থীরা কার বিপক্ষে আন্দোলন করবে? সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আদেশ তো তাদের পক্ষেই আছে। এরপরে আন্দোলন চলমান থাকা প্রমাণ করে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য কোনও গোষ্ঠী বা মহল এই আন্দোলনকে উসকানি দিচ্ছে।”

কোটা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে জনদুর্ভোগ হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি উল্লেখ করেন, “শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলন চলমান রাখলে জনসাধারণের ভোগান্তি বাড়ছে। জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। এই আন্দোলনের কাছে জনগণ জিম্মি হয়ে পড়লে তরুণ শিক্ষার্থীদের ওপর তারা আস্থাহীন হয়ে পড়বে।”

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের অভিযোগ করেন, “চিহ্নিত একটি রাজনৈতিক মহল শিক্ষার্থী ও জনগণের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে ফায়দা লোটার অপচেষ্টা করছে। আমরা বিশ্বাস করি না, কোমলমতি সব শিক্ষার্থী দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনাকে উপেক্ষা করতে চায়। যারা শুধু রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তারাই আদালতের নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে শক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা করছে।”

সেতুমন্ত্রী বলেন, “যেকোনও আন্দোলন হলেই বিএনপি-জামায়াত ও তাদের দোসররা সেটাকে হাতিয়ার করে ক্ষমতায় যাওয়ার দুঃস্বপ্নে বিভোর হয়ে পড়ে। এখন তারা কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। কারণ তাদের ওপর জনগণের কোনও আস্থা নেই। তারা যখন ক্ষমতায় ছিল দুর্নীতি, লুটপাট, সন্ত্রাস ও উগ্র-জঙ্গিবাদের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। বিএনপির নেতা দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি তারেক রহমান হাওয়া ভবন খুলে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিল। হাজার হাজার কোটি টাকা দেশ থেকে অবৈধভাবে পাচার করে লন্ডনে বিলাসী জীবনযাপন করছে। দেশের সাধারণ জনগণের সঙ্গে তার কোনও সম্পর্ক নেই। এই দুর্নীতিবাজ নেতৃত্বের অপরাজনীতির কারণেই বারবার জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছে বিএনপি। সরকারবিরোধী কোনও আন্দোলনেই তারা সফল হতে পারেনি। সেজন্য যখনই অরাজনৈতিক আন্দোলন হয় সেটাকে পুঁজি করে রাজনীতির অপচেষ্টা করে বিএনপি।”

তিনি আরও বলেন, “দেশের মানুষের যৌক্তিক দাবির প্রতি আওয়ামী লীগ সর্বদা আন্তরিক। কোনও যৌক্তিক দাবিই কখনওই আওয়ামী লীগের কাছে উপেক্ষিত হয়নি। আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে একটি জনকল্যাণকর উন্নত-সমৃদ্ধ রাষ্ট্র বিনির্মাণে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা তরুণ শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানাবো আপনারা কারও রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে অপব্যবহারের শিকার হবেন না। চূড়ান্ত শুনানিতে আন্দোলনকারীদের পক্ষের আইনজীবীর আরও যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সুযোগ রয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ আদালত চূড়ান্ত শুনানির মাধ্যমে এ বিষয়ে নিষ্পত্তি করবে। আদালত আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অসন্তোষের বিষয়গুলো চূড়ান্ত শুনানির সময় আমলে নিয়ে বাস্তবসম্মত চূড়ান্ত রায় দেবেন ও বিষয়টির নিষ্পত্তি হবে। আমরা আন্দোলনকারীদেরকে ধৈর্য ধারণের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হতে পারে এই ধরনের সব কর্মসূচি পরিহার করে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী যার যার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফেরার জন্য আবারও অনুরোধ জানাচ্ছি।”

Link copied!