অভিবাসন সংক্রান্ত অপতথ্য রোধে বাংলাদেশ-ইতালি একসঙ্গে কাজ করবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

মে ৫, ২০২৪, ০৬:৩৬ পিএম

অভিবাসন সংক্রান্ত অপতথ্য রোধে বাংলাদেশ-ইতালি একসঙ্গে কাজ করবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী

সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্রিফিংয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত। ছবি: দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ

অভিবাসন সংক্রান্ত অপতথ্য রোধে বাংলাদেশ-ইতালি একসঙ্গে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

রোববার (৫ মে) বিকেলে সচিবালয়ে নিজ দপ্তর কক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত অ্যান্তিনিও আলেসান্দ্রোর সৌজন্য সাক্ষাত শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বিষয়টি জানান তিনি।

ব্রিফিংয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “অভিবাসনের বিষয়ে রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনায় যেটি উঠে এসেছে তা হলো, একটা গোষ্ঠী যারা মানব পাচারকারী তারা সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের অপতথ্য ছড়িয়ে মানুষকে লোভে ফেলে। মিথ্যাচার করে ফেক নিউজের মাধ্যমে তারা লোভে ফেলে। লোভের ফলে মানুষ ফাঁদে পড়ে অনেক সমস্যায় পড়ে যায়, এমনকি মৃত্যুরও মুখোমুখি হয়।”

বাংলাদেশে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত অ্যান্তিনিও আলেসান্দ্রোর সৌজন্য সাক্ষাত করেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আরাফাত। ছবি: দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ

তিনি আরও বলেন, “সামাজিক মাধ্যমে যতো অপতথ্য, ফেক নিউজ ও গুজব আছে, শুধু অভিবাসনের ক্ষেত্রে যারা মানব পাচারের শিকার হয় তারাই নয়। বরং বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষরা এগুলোর শিকার হয়।”

সাংবাদিকদের তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, “এ বিষয়ে কীভাবে বাংলাদেশ-ইতালি একসঙ্গে কাজ করতে পারে সে বিষয়ে ইতালির রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে রাষ্ট্রদূত একমত হয়েছেন যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অপতথ্যের প্রচার যেভাবে হয়, দিন শেষে মানুষ ঝুঁকিতে পড়ে। সেটা অভিবাসনের ক্ষেত্রে বা অন্য যেকোনো ক্ষেত্রেই হোক।”

মোহাম্মদ আরাফাত বলেন, “এ বিষয়ে দুই দেশ কীভাবে একসাথে কাজ করতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তাদের আইন কানুন যেগুলো আছে সেগুলো তারা শেয়ার করবে। অপতথ্য রোধে আমরা যে উদ্যোগ নেবো সেগুলো তারা সমর্থন করবে।”

তিনি আরও বলেন, “মানব পাচার অপতথ্যের একটা ফলাফল। এই ধরনের ফলাফলের মধ্যে যাতে মানুষ না পড়ে। অপতথ্য শুধু রাজনীতি বা দলীয় রাজনীতির বিষয় না। সমাজের বিভিন্ন স্তরের সাধারণ মানুষ অপতথ্যের শিকার হয়ে বিপদে পড়ে। গ্রামে-গঞ্জে অনেক নারী-শিশু অপতথ্যের শিকার হয়ে বিপদে পড়ে। অনেক সাধারণ মানুষ অপতথ্যের শিকার হয়ে অবৈধ অভিবাসনের রাস্তা বেছে নিয়ে বিপদে পড়ে। যে কারণে সঠিক তথ্যের জায়গায় আমাদের সঙ্গে আমাদের বন্ধু রাষ্ট্রের ও দেশের মধ্যে অংশীজন যারা আছেন তাদের মধ্যে একটা সমঝোতা থাকা দরকার।”

প্রতিমন্ত্রী বলেন, “ইতালির একটি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, সমৃদ্ধ ইতিহাস আছে। বাংলাদেশ ও ইতালির মধ্যে চলচ্চিত্র ও সংস্কৃতির অন্যান্য ক্ষেত্রে পারস্পরিক বিনিময়ে হতে পারে। ইতালির ভেনিস শহরে বড় ধরনের উৎসব হয়। সেখানে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে কীভাবে আমরা বাংলাদেশকে তুলে ধরতে পারি সে বিষয়েও ইতালরি রাষ্ট্রদূত আগ্রহ দেখিয়েছেন এবং সে বিষয়ে তারা সহযোগিতা করবে।”

বিশ্ব গণমাধ্যম সূচকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অবস্থান নিয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী
বিশ্ব গণমাধ্যম সূচকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অবস্থান নিয়ে সাংবাদিকরা এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এ সময় বলেন, “রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্সের (আরএসএফ) সূচক প্রকাশের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। কিন্তু এই সূচকের বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট হয়ে যাবে যদি পদ্ধতিগত দুর্বলতা থাকে। আমি তাদের অনুরোধ করবো তারা যাতে বিশ্বাসযোগ্যতার স্বার্থে পদ্ধতিগত দুর্বলতা উতরে যেতে পারে এবং তথ্য নেওয়ার পর তা যাচাই করে।”

তিনি আরও বলেন, “আরএসএফের চলতি বছরের প্রতিবেদন এসেছে গত বছরের কার্যক্রমের ওপর। তাদের নির্ণয় প্রক্রিয়ায় তারা কোনো পরিবর্তন আনেনি। ১০-১২ জন মানুষের একটা মতামত নিয়ে সূচক তৈরি করলে, এটা গোটা দেশের চিত্র হতে পারে না। এসব মতামত কার কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে, কত জনের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে, সেখানে কারা আছে এর কোনো স্বচ্ছতা সেখানে নেই। আরএসএফের সূচক তৈরির পদ্ধতি খুবই দুর্বল। যার মাধ্যমে প্রকৃত চিত্রের প্রতিফলন হয় না।”

মোহাম্মদ আরাফাত বলেন, “আরএসএফের এ ধরনের পদ্ধতিতে সূচক প্রকাশ গণমাধ্যমের পরিবেশের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে পারছে না। এতে গলদ আছে, ভুল আছে। সেটা আমরা তাদের কাছে তুলে ধরবো।

Link copied!