বিএনপি পোশাক শ্রমিকদের উসকানি দিয়ে বিভ্রান্ত করছে: ওবায়দুল কাদের

জাতীয় ডেস্ক

নভেম্বর ১০, ২০২৩, ০২:৩৭ পিএম

বিএনপি পোশাক শ্রমিকদের উসকানি দিয়ে বিভ্রান্ত করছে: ওবায়দুল কাদের

ছবি: সংগৃহীত

উসকানি দিয়ে বিএনপি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের বিভ্রান্ত করছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন,  এখানে পরিষ্কারভাবে বিএনপি ও তাদের দোসরদের কালো হাত আছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন,“আমরা আশা করি, শ্রমিকরা নিজেরা নিজেদের ক্ষতি করবে না। শ্রমিকদের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের সংস্থান করে যে চাকরি সে চাকরি নিয়ে তারা যদি বিভ্রান্ত হয় তাহলে ক্ষতিটা বাংলাদেশের হবে এবং শ্রমিকদের নিজেদেরও হবে।”

শুক্রবার (১০ নভেম্বর ) সকালে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সম্পাদক মণ্ডলীর সাথে সহযোগী সংগঠনের যৌথ সভা শেষে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

পোশাক শ্রমিকদের চলমান আন্দোলনে বিএনপির উসকানি আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ইন্ধন তো আছেই। এখানে পরিষ্কারভাবে বিএনপি এবং তার দোসরদের কালো হাত বিস্তৃত হয়ে আছে। তারাই উসকানি দিচ্ছে, তারাই গুজব সৃষ্টি করছে। উসকানি আর গুজব সৃষ্টি করে তারা নিরীহ শ্রমিকদের বিভ্রান্ত করছে।

কাদের  বলেন, “কোথায় ছিল শ্রমিকদের বেতন ৮০০ টাকা! আর সেই বেতন এখন সাড়ে ১২ হাজার টাকা। যেটা ৫৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন দেশের অবস্থাও বুঝতে হবে। নেত্রী গতকাল পরিষ্কার করে সেটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন। সেখানে বিজিএমই এর ২/১ জন নেতারাও ছিলেন। তারা শুনেছেন। 

এ ব্যাপারে বেশিরভাগ সমাধান হয়ে গেছে। তবে কোনাবাড়ি ও আশুলিয়া, এই দুইটা জায়গায় কিছু সমস্যা আছে। আমরা মনে করি, আমাদের শ্রমিকরা বর্তমান বাস্তবতার বিষয়গুলো উপলব্ধি করে সমাধানে এগিয়ে আসবেন।”

প্রধানমন্ত্রী নিয়মিত মনিটর করছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এটা নিয়ে খুব একটা ষড়যন্ত্র করে, ওই ২৮ তারিখের তো কিছু একটা করবে সে আশা গুড়ে বালি। আমরা আশা করি, শ্রমিকরা নিজেরা নিজেদের ক্ষতি করবে না। 

শ্রমিকদের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের সংস্থান করে যে চাকরি সে চাকরি নিয়ে তারা যদি বিভ্রান্ত হয় তাহলে ক্ষতিটা বাংলাদেশের হবে এবং শ্রমিকদের নিজেদেরও হবে। গুজবকারীদের কিছুই হবে না। গুজবকারীরা ভেজাল করবে, গন্ডগোল পাকাবে এবং নিজেদের পকেট ভারী করবে। তাদের খারাপ মিশন আছে। কাজেই তাদের কথায় কেউ যেন বিভ্রান্ত না হয়।”

তিনি বলেন,‘নির্বাচনের আগে আমাদের ২টা কাজ। এর মধ্যে একটা হলো নির্বাচনের প্রস্তুতি। আরেকটা কাজ হলো বিএনপির নেতৃত্বে বিরোধী দলের আন্দোলনের নামে চোরাগুপ্তা হামলা মোকাবিলা এবং নির্বাচনের পরিবেশ বজায় রাখা।’

বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলকে মোকাবিলা ও নির্বাচনের প্রস্তুতি—এই দুই কাজ নিয়ে এগুচ্ছে আওয়ামী লীগ জানিয়ে তিনি বলেন, আজকের পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রতিকুল পরিস্থিতি মোকাবেলা করছি। 

আজকে ঢাকা মহানগর উত্তর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সাথে বৈঠকে আলাপ আলোচনার ভূমিকা আমাদের কার্যক্রমকে জোরদার করতে সহায়ক হবে। আমাদের হাতে সময় একেবারেই কম। নির্বাচন জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে হলে আমাদের হাতে সময় একেবারেই কম।

আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি চোরাগুপ্তা হামলায় দাবি করে কাদের বলেন,২৮ তারিখের পরে ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশে সরকারি দল সাধারণত স্ট্যান্ড শো করতে পারে না। সাংগঠনিক কার্যক্রম কিছুটা কম হয়। এবার কিন্তু দেখতে পাচ্ছি ভিন্ন চিত্র। সারা দেশের নেতাকর্মীরা মাঠে আছে। সবাই বিবেকের তারণায় একটা আদর্শের অনুসারী, এক প্রতিকূল পরিস্থিতির সাথে লড়াই করে যাচ্ছে, স্রোতের বিপরীতে।

‘দেশে বিভিন্নভাবে সরকারের বিরুদ্ধে চক্রান্ত চলছে। এটা আমরা লক্ষ্য করছি। ২৮ তারিখে তাদের আন্দোলনের ব্যর্থতা, স্বাভাবিক আন্দোলনে ব্যর্থ হওয়ার পর অস্বাভাবিক পথে যাচ্ছে। তাদের পুরোনো চোরাগুপ্তা হামলা, গাড়ি পোড়ানো, আগুন সন্ত্রাসের পুনরাবৃত্তি করছে। তারা সরকার তথা আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে হটানোর জন্য হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। সরাসরি পারছে না তাই চোরাগুপ্তা হামলায় চেষ্টা করছে’ বলেন তিনি।

সামনে কঠিন পথ অতিক্রম করার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক পাহারায় থাকার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপনাদের আরও সতর্ক থাকতে হবে, যেসব জায়গায় তারা হামলা চালায়, সেসব জায়গায় আমাদের নেতাকর্মীদের উপস্থিতি জোরদার করতে হবে। প্রস্তুতি নিয়ে, জায়গা চিহ্নিত করে অবস্থান নিয়ে সতর্ক পাহারায় থাকতে হবে।

তিনি বলেন, ‘সরকারি দলের অনাগ্রহ, আলস্য আমরা দেখি নি। আমরা লক্ষ্য করছি আদর্শের প্রশ্নে নেত্রীর প্রতি আনুগত্য, নেত্রীর নির্দেশে আদেশ পালনে প্রত্যেকে সক্রিয়। সামনে আরও কঠিন পথ আমাদের পাড়ি দিতে হবে। সেভাবে আপনাদের প্রস্তুত করুন। 

এটা শুধু নির্বাচনর জন্য না, এটা আদর্শের লড়াই। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে পক্ষের শক্তির লড়াই, আমাদের অস্তিত্বের লড়াই। উন্নয়ন আর অর্জনের জন্য শেখ হাসিনার বিকল্প নেই। এই যুদ্ধ জয়ের প্রতিজ্ঞা নিয়েই নেমেছে আমাদের দলের নেতাকর্মীরা। এই সংকট আস্তে আস্তে কেটে যাবে।’

এসময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আবদুস সবুর, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসিম কুমার উকিল, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক সামসুন্নাহার চাঁপা, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানসহ কেন্দ্রীয় ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

Link copied!