সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৩, ০৬:৩৫ পিএম
শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিষয়ে বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় থাকা ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) এমরান আহম্মদ ভূঁইয়াকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে তার সংসদীয় এলাকা আখাউড়া-কসবায় দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতে এসে আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে যুগান্তরকে এ তথ্য জানান।
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘন ও দুর্নীতির মামলা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খোলাচিঠি (বিবৃতি) পাঠিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্বস্থানীয় দেড় শতাধিক ব্যক্তি। তাঁদের মধ্যে শতাধিক নোবেলজয়ী রয়েছেন। এ বিষয়ে গত সোমবার হাইকোর্টের বর্ধিত ভবনের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, ড. ইউনূস একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তাঁর সম্মানহানি করা হচ্ছে এবং এটি বিচারিক হয়রানি।’ শতাধিক নোবেলজয়ীদের ওই খোলা চিঠির বিপরীতে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেওয়ার কথা রয়েছে, এমন দাবি করে এমরান আহম্মদ বলেন, ‘অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে কর্মরত সবাইকে এতে স্বাক্ষর করার জন্য নোটিশ করা হয়েছে। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করব না।’
এর পরদিন ৫ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের আইনমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি (এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া) অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন ডিএজি (ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল)। তিনি যদি সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেন, তাহলে তাঁকে হয় পদত্যাগ করে কথা বলা উচিত, অথবা অ্যাটর্নি জেনারেলের অনুমতি নিয়ে কথা বলা উচিত। তিনি সেটি করেননি। তিনি শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন।’
গত বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘গত কয়েক দিন আগে আমার মামলার বিচার শুরু হয়েছে। আমার ধারণা, এক-দেড় মাসের মধ্যে হয়তো আমাকেও জেলে যেতে হতে পারে।’ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এ আশঙ্কার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে আজ আখাউড়ায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওনাকে (মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর) কেন জেলে যেতে হবে, এটা আমি জানি না। যদি তিনি কোনো অপরাধ করে থাকেন, তাহলে জেলে যেতে হবে।’
গত মঙ্গলবার দুপুরে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের ৫১১ নম্বর রুমের সামনে এমরান আহম্মদ ভূঁইয়ার নেমপ্লেট খুলে ফেলা হয়। পাশাপাশি তার কক্ষে থাকা মামলার সব ফাইল সরিয়ে নেয় অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা।
আগের দিন সোমবার এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া বলেছিলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিপক্ষে বিবৃতিতে তিনি সই করবেন না। তিনি বলেন, ড. ইউনূসের সম্মানহানি করা হচ্ছে এবং এটা বিচারিক হয়রানি। আমি মনে করি, নোবেল বিজয়ী এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনসহ ১৬০ জনের বিবৃতি ঠিকই আছে। আমি ওনাদের বিবৃতির সঙ্গে একমত।