ছবি: সংগৃহীত
প্রতারণার আরেক মামলায় ই-কমার্স কোম্পানি ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ রাসেল ও তার স্ত্রী কোম্পানির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার মহানগর হাকিম মনিরুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন বলে জানিয়েছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী এইচ এম রুহুল আমিন মোল্লা।
তিনি বলেন, “দণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৩ মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।”
এটি নিয়ে এ পর্যন্ত পাঁচটি মামলায় এই দম্পতির মোট ১২ বছর কারাদণ্ড হলো।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে যাত্রা শুরুর পর গাড়ি, মোটরসাইকেল, আসবাবপত্র, স্মার্ট টিভি, ফ্রিজ, এসি, ওয়াশিং মেশিনের মত পণ্য অর্ধেক দামে বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়ে সাড়া ফেলে অনলাইন মার্কেট প্লেস ইভ্যালি।
তাদের চটকদার অফারের ‘প্রলোভনে’ অনেকেই বিপুল অংকের টাকা অগ্রিম দিয়ে পণ্যের অর্ডার করেছিলেন পরে বেশি দামে বিক্রি করে ভালো লাভ করার আশায়। কিন্তু মাসের পর মাস অপেক্ষা করেও তাদের অনেকে পণ্য বুঝে পাননি; ইভ্যালি অগ্রিম হিসেবে নেওয়া টাকাও ফেরত দেয়নি।
এক পর্যায়ে ক্রেতা ও পণ্য সরবরাহকারীদের কাছে ৫৪৩ কোটি টাকার দায়ে পড়ে ইভ্যালি। এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনার মধ্যে ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে ইভ্যালিসহ আরও বেশ কিছু ই কমার্স কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বিক্ষোভে নামে গ্রাহকরা।
সে সময় রাসেল ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে কয়েকশ মামলা হয়; এ মামলা তারই একটি। আবুল কালাম আজাদ নামের এক গ্রাহক ২০২৩ সালের ৭ ডিসেম্বর আদালতে এ মামলা করেন।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ই-ভ্যালির চমকপ্রদ বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে আবুল কালাম আজাদ ২৩ লাখ টাকায় ১১টি মোটর সাইকেলের ক্রয়াদেশ দেন। তিনি পাঁচ লাখ টাকা পরিশোধ করেন। ৭-৩০ দিনের মধ্যে পণ্য সরবরাহের কথা থাকলেও তা করা হয়নি।
মামলার পরে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। পিবিআই’র এসআই বাসুদেব সরকার গত বছরের ২৭ মার্চ রাসেল ও শামীমা নাসরিনকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন জমা দেন।
এরপর ৯ ডিসেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। তিনজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে বৃহস্পতিবার রায় দিল আদালত।
এর আগে গত ১৩ এপ্রিল আরেক প্রতারণার মামলায় রাসেল ও শামীমার তিন বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করে আদালত। তার আগের সপ্তাহে ৬ এপ্রিল বিশ্বাস ভঙ্গ প্রতারণার মামলায় তাদের তিন বছরের কারাদণ্ড হয়।
এরও আগে গত ২৯ জানুয়ারি আরেক মামলায় তাদের দুই বছর করে কারাদণ্ড হয়। তার আগে ২০২৪ সালের ২ জানুয়ারি চট্টগ্রামের এক গ্রাহকের করা মামলায় রাসেল ও শামীমার এক বছর করে কারাদণ্ড হয়।