ডিসেম্বর ১৩, ২০২৩, ০৪:৪৪ পিএম
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এম.পি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বীরত্ব গাঁথা ইতিহাস তৈরি হয়েছিল। যে ইতিহাস তাবত দুনিয়াকে জানিয়ে দিয়েছিল বাঙ্গালী জাতি হচ্ছে বীরের জাতি। মুক্তিযুদ্ধের আত্মদানের ইতিহাস ভুলে গেলে আমরা পথভ্রষ্ট হয়ে যাব। মুক্তিযুদ্ধ হচ্ছে আমাদের প্রেরণা, শক্তি ও চলার পথ।’
প্রতিমন্ত্রী বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ৭নং বিজোড়া ইউপি’র বহলা বদ্ধভূমিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এক স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধই হচ্ছে আমাদের সঠিক গন্তব্যে যাওয়ার অনুপ্রেরণা। সেই সঠিক পথে নিয়ে গিয়েছিলেন আমাদের মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তারই রক্তের উত্তরাধিকার প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা আজকে বাংলাদেশকে উন্নয়ন, আত্মমর্যাদা এবং সম্মানের জায়গায় নিয়ে গেছেন। বাংলাদেশকে আর কেউ খাটো করে দেখতে পারে না। বাংলাদেশ পৃথিবীতে উন্নয়নের রোল মডেল হয়ে গেছে। বাংলাদেশ বদলে গেছে। পৃথিবীর রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানেরা বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করে। আমেরিকার একদিকে স্যাংশন দেয়।অন্যদিকে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সেলফি তোলে। এটাই হচ্ছে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সুখ আমাদের স্বাধীনতার সুখ।’
নৌপ্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যখন দেখি ফ্রান্সের মত একটি শক্তিধর রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে শ্রদ্ধা জানায়, তখন ৩০ লক্ষ শহীদের রক্ত ফিনকি দিয়ে ওঠে। সেই স্বাধীনতা সুখের জন্য, মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের সাধ নেওয়ার জন্য। আমরা যখন দেখি মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টে প্রতিনিয়ত বাংলাদেশ সম্পর্কে ব্রিফিং হচ্ছে, যখন দেখি জাতিসংঘ প্রতিনিয়ত বাংলাদেশ সম্পর্কে তাদের মন্তব্য দিচ্ছে, তখন আমাদের গর্বে বুক ভরে যায়।’
তিনি বলেন, ‘৭৫ পরবর্তী যারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে পিছনের দিকে ঠেলে দিয়েছিল, মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে, সেই অপরাধীদের সামনের কাতারে আনা হয়েছিল। তাদের হাতে সমাজ রাজনীতি অর্থনীতি তুলে দিয়ে তাদের দ্বারা শিক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করে বিকৃত ধ্যান ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। ফলে বাংলাদেশ আগাতে পারে নাই। বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে নাই। বাংলাদেশ মুখ থুবড়ে পড়ে গিয়েছিল।’
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা দেখেছি বাংলাদেশের মানুষ খেতে পেতনা । শিক্ষার অধিকার ছিল না। চিকিৎসা ছিল না। পরনে কাপড় ছিলো না। বাসস্থান ছিলো না। এই বীরের জাতিকে একটি ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করেছিলো ৭৫ পরবর্তী জেনারেলরা। শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আজকে মুক্তিযোদ্ধারা বিজয়ের ও মুক্তিযুদ্ধের সাধ অনুভব করছে। তারা আজকে মনে করছে যে বাংলাদেশ বিজয় হয়েছে। কারণ বাংলাদেশ আজ আত্মমর্যাদায় দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ এখন নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মত মেগা প্রকল্প করার সাহস রাখে। বাংলাদেশের গ্রামীণ অবকাঠামো বদলে গেছে। রাস্তা ঘাট ব্রীজ কালভার্ট কোথাও কোন কিছু বাকি নাই। বাড়ি বাড়ি বিদুৎতের আলোয় আলোকিত হয়েছে। শিশুরা বিনামূল্যে বই পাচ্ছে। প্রতিটি শিশু আজকে স্কুল যায়। প্রত্যেক মা-বোন বিভিন্ন কর্মের সাথে জড়িত আছে। প্রত্যেকটি মানুষ আজকে কর্মমুখর হয়েছে।’
বিজোড়া ইউপি চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার রহমান আলী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র আলহাজ্ব সবুজার সিদ্দিক সাগর, সাধারণ সম্পাদক রমাকান্ত রায়, সহ-সভাপতি আব্দুস সবুর, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন, এড, রবিউল ইসলাম রবি (পি.পি), সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল আজাদ মনি, বিভূতি ভূষণ সরকার প্রমুখ।