ডেঙ্গু প্রতিরোধে স্থানীয় সরকার বিভাগের কমিটি গঠিত

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৪, ০৭:৪৩ পিএম

ডেঙ্গু প্রতিরোধে স্থানীয় সরকার বিভাগের কমিটি গঠিত

ছবি: সংগৃহীত

ডেঙ্গু প্রতিরোধে স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক ঢাকা দক্ষিণ এবং উত্তর সিটি করপোরেশনের জন্য বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে ছয় সদস্য বিশিষ্ট দুইটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। দুই সিটি করপোরেশনে প্রশাসকদের আহ্বায়ক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করে গঠিত কমিটিতে তিনজন বিশেষজ্ঞকে সদস্য করা হয়েছে। এ ছাড়াও সিটি করপোরেশন দুটির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে কমিটির সদস্য করা হয়েছে।

সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগ সম্মেলন কক্ষে দেশব্যাপী ডেঙ্গু ও মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধকল্পে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত সভায় এই কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামানের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ. এফ. হাসান আরিফ।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে বিশেষজ্ঞ সদস্য হিসেবে কাজ করবেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব প্রিভেনটিভ এন্ড সোশ্যাল মেডিসিন (নিপসম)’র অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ গোলাম ছারোয়ার, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের  এন্টোমোলোজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. রাশেদুল ইসলাম এবং কীটতত্ত্ববিদ মো. রেজাউল করিম। অপর কমিটিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের হয়ে কাজ করবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. শেফালি বেগম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্টোমোলোজিস্ট ড. তানজিন আক্তার এবং প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফিরোজ জামান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ. এফ হাসান আরিফ বলেন, সারাদেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। উভয় পরিকল্পনায় বিশেষজ্ঞদের মতামতকে প্রাধান্য দিতে হবে। আমরা এখন ডেঙ্গু পরিস্থিতির সুপার পিক সিজনে আছি। আমি আশা করি এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশেষজ্ঞগণের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি দুটি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে।

সভায় প্রদত্ত তথ্য মতে জানা যায়, ঢাকায় ডেঙ্গু রোগের সংক্রমণ হতে নাগরিকদের রক্ষাকল্পে মশার প্রজননস্থল বিনিষ্টকরণ, লার্ভা ও মশক নিধন কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্তৃক এ বছর আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৪৮টি স্থান পরিদর্শন করা হয়। পরিদর্শনকৃত স্থানে লার্ভা পাওয়া গেছে ৭ হাজার ১৯৫টি স্পটে। প্রজননস্থল ধ্বংস ও লার্ভিসাইড স্প্রে করা হয়েছে ২ লাখ ৭৩ হাজার ৫৩৮টি স্পটে। মশক নিধনে ৩৭ হাজার ৫০৫টি নোভালুরন ট্যাবলেট প্রয়োগ করা হয়েছে।

সভায় ডেঙ্গু মোকাবিলায় স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা জানান, গড়পড়তা কার্যক্রম গ্রহণ না করে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে হটস্পট চিহ্নিত করে মশক নিধন কর্মসূচি নিতে হবে। শুধু সিজনভিত্তিক নয়, সারাবছরই মশক নিধন কার্যক্রম চলমান রাখতে হবে। যেসব স্থানে মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে সেখানে প্রকৃত অর্থে মশা ও লার্ভা বিনষ্ট হয়েছে কিনা তা এন্টোমোলজিস্ট দিয়ে নিরূপণ করতে হবে। দুই সিটি করপোরেশনসহ আন্তঃমন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে কাজের সমন্বয় দরকার। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীকে শুরুতেই চিকিৎসকের পরামর্শ তথা হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। সর্বোপরি জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।

সভায় দেশের সব সিটি করপোরেশনের প্রশাসক, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিশেষজ্ঞজনসহ স্থানীয় সরকার বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
 

Link copied!