জুলাই ৭, ২০২৫, ০১:৫৫ পিএম
ছবি: প্রতীকী
পঞ্চগড়ে দেড় বছর বয়সী ছেলের গলায় ছুরি ধরে এক নারীকে দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার বিকালে ওই ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে পঞ্চগড় সদর থানায় ধর্ষণ মামলা করেন। পরে অভিযান চালিয়ে রাতেই বাড়ি থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে শুক্রবার রাতে পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাড়ে তিন মাইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে পঞ্চগড় সদর থানার ওসি আব্দুল্লা হিল জামান জানান।
গ্রেপ্তাররা হলেন- পঞ্চগড় সদর উপজেলার সদর ইউনিয়নের জগদল বাজার এলাকার জনি ইসলাম (২৭), বিপ্লব হোসেন (২৫), মকছেদুল ইসলাম (৩৩) ও সাতমেড়া ইউনিয়নের বদিনাজোত এলাকার সাদেকুল ইসলাম (২৮)।
ওসি বলেন, “শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে দ্রুত সদর উপজেলার সাড়ে তিন মাইল এলাকায় যাই। সেখান থেকে অচেতন অবস্থায় এক নারী এবং তার সঙ্গে থাকা একটি দেড় বছরের ছেলে শিশুকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।”
ঘটনার বর্ণনায় ধর্ষণের শিকার ওই নারী বলেন, “আমার ছেলের হঠাৎ ডায়েরিয়া হওয়ার কারণে রাতে বোদা উপজেলার জেমজুট এলাকা থেকে গাড়িতে করে বাবার বাড়ি সদরের জগদলে যাই। এরপর জগদল থেকে অটোরিকশায় করে তিনমাইল এলাকায় গেলে আমাদের গাড়ির পেছনে থাকা এক পরিচিত অটোরিকশা চালক আমাকে ডাক দিয়ে নামতে বলে।
“আমি গাড়ি থেকে থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে ছয় জন যুবক আমার হাত, মুখ ও গলা চেপে ধরে একটা চা পাতার বাগানে নিয়ে যায়। এ সময় তাদের কাছে আমি অনেক আকুতি মিনতি করি। আমি যেনো না চিৎকার করি সেজন্য আমার ছোট ছেলের গলায় ছুরি ধরে। তখন আমি নিরুপায় হয়ে যাই।”
তিনি বলেন, “আমি ছয়জনের মধ্যে চার জনকে চিনতে পারি। তারা চলে যাওয়ার সময় আমার মুখে কি জানি স্প্রে করে, তারপর আর কিছু বলতে পারি না।”
ধর্ষণের শিকার ওই নারীর বড় ভাই বলেন, “রাত দেড়টায় পুলিশের মাধ্যমে খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে দেখি বোনের শরীরে অনেক রক্ত। অজ্ঞান অবস্থায় ছিল। আমার বোনের সঙ্গে যারা এমন অমানবিক কাজ করেছে আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক আব্দুল কাশেম বলেন, “শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার সময় পুলিশ অচেতন অবস্থায় একজন নারীকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। প্রাথমিক পরীক্ষায় শারীরিক নির্যাতনের আলামত পাওয়া গেছে। আপাতত তিনি স্থিতিশীল রয়েছেন।”
ওসি আব্দুল্লা হিল জামান বলেন, “ওই নারী চারজনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত পরিচয় আরও দুজনকে আসামি করে মামলা করেছেন। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত চার আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।”
গ্রেপ্তার চার জনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।