কোটা আন্দোলন

মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্তে ‘জাতীয় গণতদন্ত কমিশন’

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জুলাই ২৯, ২০২৪, ০৬:১৪ পিএম

মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্তে ‘জাতীয় গণতদন্ত কমিশন’

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মো. আব্দুল মতিন এবং আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল। ছবি: সংগৃহীত

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক প্রাণহানি, শিক্ষার্থীদের নির্যাতন, গুলি ও পাইকারিভাবে গ্রেপ্তারসহ নানা সহিংস ঘটনায় সংবিধান, প্রচলিত আইন ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনের অভিযোগগুলো তদন্তে ‘জাতীয় গণতদন্ত কমিশন’ গঠন করা হয়েছে।

সোমবার (২৯ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো বার্তায় এই তথ্য জানানো হয়েছে। বার্তা পাঠিয়েছেন গণতদন্ত কমিশনের যুগ্ম সদস্য সচিব তানজিমউদ্দিন খান ও মাহা মির্জা।

গণতদন্ত কমিশনের পাঠানো বার্তায় বলা হয়, ১৬ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ প্ল্যাটফর্মে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দমনের লক্ষ্যে বেধড়ক পেটানোর মধ্য দিয়ে সহিংসতার সূত্রপাত হয়। প্রতিবাদে বাংলাদেশ জুড়ে শিক্ষার্থী ও জনসাধারণ পথে নেমে আসে। এদিনই রংপুরে আবু সাঈদকে সরাসরি বুকে গুলি করা হয়। কিন্তু পুলিশ যখন মামলা করে, তখন সাধারণ ছাত্র ও জনগণকে দায়ী করা হয়।

এতে গোটা তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে সাধারণ নাগরিকদের মনে প্রশ্ন উঠেছে। একই সঙ্গে এসব ঘটনার প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটনের দাবি উঠেছে। এ ঘটনায় সংবাদপত্রের অন্তত ২০৯ জন নিহতের খবর প্রকাশ হলেও সরকারি হিসাবে সেটা দেখানো হয়েছে ১৪৭ জন।

কোটা বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের নির্যাতন, গুলি ও পাইকারিভাবে গ্রেপ্তারসহ নানা সহিংস উপায়ে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়েছে। এতে সংবিধান, প্রচলিত আইন ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনের অভিযোগও উঠেছে। এসব ঘটনার কারণ উদ্ঘাটন, সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের আবশ্যকতা রয়েছে। এরই অংশ হিসেবে দেশের শিক্ষক, আইনজীবী, সংস্কৃতিকর্মী ও সাধারণ অভিভাবকদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের কয়েকজন প্রথিতযশা ব্যক্তির সমন্বয়ে একটি ‘জাতীয় গণতদন্ত কমিশন’ গঠন করা হয়েছে। কমিশনের সদস্যরা হলেন- সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মো. আব্দুল মতিন, আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আবু সাইয়িদ খান, অধ্যাপক গীতিআরা নাসরিন, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আশরাফ কায়সার, আইনজীবী অনীক আর হক, অধ্যাপক তানজিমউদ্দিন খান, লেখক ও গবেষক মাহা মির্জা।

আরও বলা হয়, কমিশনের যুগ্ম সভাপতি হবেন বিচারপতি মো. আব্দুল মতিন ও সুলতানা কামাল। আর সদস্যসচিব হিসেবে যৌথভাবে কাজ করবেন অধ্যাপক তানজিমউদ্দিন খান ও মাহা মির্জা।

এ ছাড়া এই গণতদন্ত কমিশনে উপদেষ্টা হিসেবে থাকবেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী তোবারক হোসেন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন, আইনজীবী ও শিক্ষক ড. শাহদীন মালিক, লেখক ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সলিমুল্লাহ্ খান, শিক্ষক কাজী মাহফুজুল হক সুপন, আইনজীবী রাশনা ইমাম, আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ও শিক্ষক সাইমুম রেজা তালুকদার।

জাতীয় গণতদন্ত কমিশনের পক্ষ থেকে সচেতন ব্যক্তিদের ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’কে কেন্দ্র করে চলতি মাসের শুরু থেকে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন সহিংস নির্যাতন, নিপীড়ন, হত্যা, গুলিবর্ষণ, হুমকি, মামলা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যাবতীয় তথ্য কমিশনের কাছে পাঠানোর জন্য শিগগিরই অনুরোধ জানানো হবে। এ-সংক্রান্ত অডিও, ভিডিও, ফটোগ্রাফ ও লেখাসহ যেকোনও ধরনের তথ্যই পাঠানো যাবে।

Link copied!