অক্টোবর ২৮, ২০২৩, ০৭:০৯ পিএম
নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়ার কথা শনিবার (২৮ অক্টোবর) বেলা ২টা থেকে। তবে শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) থেকেই নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে শুরু করেন। আজ সকাল থেকে বিএনপি নেতা-কর্মীরা নয়াপল্টনে মহাসমাবেশে যোগ দিতে শুরু করেন।
এ সময় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশস্থলে মুঠোফোনে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফোর-জি থেকে ইন্টারনেট সেবা নামিয়ে আনা হয়েছে টু-জিতে, যার মাধ্যমে কার্যত ইন্টারনেট ব্যবহার সম্ভব নয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হলেও, তবে কেউ এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কথা বলতে রাজি হননি। অবশ্য জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ফটক এলাকায় মুঠোফোনে নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট পাওয়া যাচ্ছে, যেখানে আওয়ামী লীগ আজ শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করবে।
নয়াপল্টন থেকে মুঠোফোনে কল করা ও কথা বলাও সম্ভব হচ্ছে না। বিএনপির মহাসমাবেশস্থল থেকে বেরিয়ে আশপাশের এলাকায় গেলে কল করা ও কথা বলা সম্ভব হচ্ছে।
টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জ্যামার বসিয়ে কোনো এলাকার মোবাইল নেটওয়ার্ক বিঘ্নিত করা যায়। সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর কাছে জ্যামার রয়েছে।
গাইবান্ধা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা বাবর আলী বেলা ১১টার দিকে নয়াপল্টনে ইন্টারনেট সংযোগ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক না পেয়ে নাইটিঙ্গেল মোড়ে যান। তিনি এক প্রতিবেদনে বলেন, সেখানেও তিনি কোনো নেটওয়ার্ক পাননি।
এরপর রাজমণি সিনেমা হলের সামনে যান। সেখানেও নেটওয়ার্ক ছিল না। পরবর্তীতে তিনি সেগুনবাগিচায় রাজস্ব ভবনের সামনে গিয়ে নেটওয়ার্ক পান। পরে স্বজনদের সাথে কথা বলেন।
বিএনপির সমাবেশস্থলে থাকা প্রথম আলোর দুজন প্রতিবেদক জানান, তাঁরা বেলা ১১টা থেকে মুঠোফোনে ইন্টারনেট সংযোগ পাচ্ছিলেন না।
আওয়ামী লীগ আজ জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ফটকে সমাবেশ করবে। সেখানেও সকাল থেকে নেতা-কর্মীরা এসে জড়ো হয়েছেন। সেখানে থাকা একজন প্রতিবেদককে জানান, তিনি সহজেই দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক পাচ্ছেন।
দেশে এখন মুঠোফোনে দ্রুতগতির ফোর-জি ইন্টারনেট সেবা দেওয়া হয়। তবে তা টু-জিতে নামিয়ে আনলে শুধু কথা বলা যায়, দ্রুতগতির ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায় না।
এর আগেও বিএনপির সমাবেশ ঘিরে বিভিন্ন জায়গায় ইন্টারনেট সেবায় বিঘ্নের ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে টেলিযোগাযোগ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিষয়টি নিয়ে শনিবার (২৮ অক্টোবর) মোবাইল অপারেটরদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারাও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
ডিজিটাল অধিকার নিয়ে কাজ করা সংস্থা অ্যাকসেস নাউয়ের এক প্রতিবেদনে গত মার্চে বলা হয়, ২০২২ সালে বাংলাদেশে কর্তৃপক্ষ ছয়বার ইন্টারনেট শাটডাউন বা বন্ধ করে দিয়েছে। এদিক দিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে পঞ্চম।
অ্যাকসেস নাউয়ের হিসাবে বলা হয়, বাংলাদেশের চেয়ে বেশিবার ইন্টারনেট বন্ধের ঘটনা ঘটেছে ভারত (৮৪ বার), ইউক্রেন (২২ বার), ইরান (১৮ বার) ও মিয়ানমারে (৭ বার)।
২৩ জুলাই রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ‘ইন্টারনেট শাটডাউনসহ’ সব ধরনের ‘ডিজিটাল নির্যাতনের’ প্রতিবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, ডিজিটালাইজেশনকে সরকার জনগণের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।
বিষয়টি নিয়ে আজ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এক প্রতিবেদনে বলেন, নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার, তল্লাশি ও অভিযান চালিয়ে সরকার সারা দেশে একটি ভীতির পরিবেশ তৈরি করেছে। তারওপর ইন্টারনেট অকেজো করে রেখেছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো তারা নিজের স্বার্থে অপব্যবহার করছে।