ছয় দফাই ছিল স্বাধীনতার প্রথম সোপান: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

জাতীয় ডেস্ক

জুন ৭, ২০২৪, ০৫:০৬ পিএম

ছয় দফাই ছিল স্বাধীনতার প্রথম সোপান: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, “১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধুর ঘোষিত বাঙালির মুক্তির সনদ ছয় দফাই ছিল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সোপান।”

শুক্রবার (৭ জুন) সকালে ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস পালন উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউট হলে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “বঙ্গবন্ধু ১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের প্রথম স্বাধীনতাবার্ষিকীর দুই দিন আগে ১২ আগস্ট এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, ১৪ আগস্ট স্বাধীনতা দিবস অর্থহীন। কেননা পাকিস্তান নামক সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র কাঠামোয় কখনও বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠা ও পরিপূর্ণ মুক্তি অর্জন সম্ভব নয়।”

তিনি আরও বলেন, “১৯৫৮ সালে বঙ্গবন্ধু যখন কারাগারে তখন কমিউনিস্ট পার্টি নেতা কমরেড মনি সিংহেকে লেখা এক চিঠিতে বলেছিলেন, আমি স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি। আপনারা আমার সঙ্গে থাকবেন কিনা বলুন। বঙ্গবন্ধু এও জানতেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য কে তার পাশে থাকবেন বা থাকবেন না এটা বড় কথা নয়। তাকে কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতার জন্য ধাপে ধাপে প্রস্তুতি নিতে হবে। এই স্বাধীনতার লড়াইয়ের প্রথম প্রস্তুতি লড়াই ছিল ঐতিহাসিক ছয় দফার ঘোষণা।”

ড. হাছান বলেন, “বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান আন্দোলনের পক্ষে একজন সম্মুখ কাণ্ডারী হলেও দেশভাগের পূর্বেই বুঝে গেছিলেন বাঙালির দাসত্বের শৃঙ্খল ঘুচবে না। সেদিন এই অমোঘ সত্য তখনকার সময়ে অনেক সিনিয়র নেতা না বুঝলেও তরুণ শেখ মুজিবুর রহমান বুঝতে পেরেছিলেন বাঙালির স্বাধীনতা ও মুক্তির জন্য তাকে একাই হাল ধরতে হবে।”

এ সময় তিনি উল্লেখ করেন, “১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে অনেকগুলো ধাপ পেরিয়ে বঙ্গবন্ধু ডাক দিয়েছিলেন এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম; এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম। তিনি এই ঘোষণার মাধ্যমে সরাসরি স্বাধীনতা ঘোষণা না করলেও বাঙালিকে একটি জনযুদ্ধ শুরু করার প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছিলেন।”

মন্ত্রী বলেন, “তখনকার পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের এই মর্মে রিপোর্ট করেছিল যে, শেখ মুজিব সুকৌশলে স্বাধীনতার ঘোষণা করলেও আমাদের করার কিছুই ছিল না। আমরা শুধু চেয়ে চেয়ে দেখলাম। তাই বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণার প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পরও তাকে বিচ্ছিন্নতাবাদী বলে অপবাদ দেওয়ার কোন সুযোগ তিনি দেননি। তাই মহান মুক্তিযুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিশ্ব বিচ্ছিন্নতাবাদী অপচেষ্টা বলে অভিহিত করতে পারেননি। এটাই ছিল বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী রাজনৈতিক কৌশলের সার্থকতা।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, “বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পর একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে সোনার বাংলায় রূপায়ণে স্বপ্ন দেখেছিলেন কিন্তু ‘৭১’র পরাজিত শক্তি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তের মদদে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করলেও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও স্বপ্নকে চূর্ণ করতে পারেনি। তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা একটি বিপন্ন তরীর হাল ধরে এদেশকে আন্তর্জাতিক বিশ্বে মর্যাদাবান জাতিরাষ্ট্রে উন্নীত করেছেন।”

আওয়ামী লীগের সিনিয়র এই নেতা বলেন, “বিগত ১৫ বছরে বাংলাদেশ ৬০তম অর্থনৈতিক দেশ থেকে ৩২তম দেশে অবস্থানে উন্নীত হয়েছে। ২৮টি দেশকে পেছনে ফেলেছে। পিছিয়ে ফেলা দেশগুলোর মধ্যে মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরও আছে। আমরা অনেক উন্নয়ন ও মানবিক সূচকে পাকিস্তান তো বটেই প্রতিবেশী ভারতকেও পেছনে ফেলেছি। জাতীয় প্রবৃদ্ধির হার ভারতের চেয়ে এগিয়ে। এসব কিছু সম্ভব হয়েছে একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণতা ও দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে।”

Link copied!