সেন্টমার্টিনে ভূমিকম্পের চেয়েও ভয়াবহ কম্পন অনুভূত হয়েছে মর্টার শেলের শব্দে। স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কে দ্বীপের বিভিন্ন পাশে ছোটাছুটি শুরু করেন।
এই আতঙ্ক মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতকে কেন্দ্র করে। দেশটির জান্তা সরকার ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে যেন সমঝোতার নামগন্ধ নেই। প্রতিনিয়ত দেশের ভুখণ্ডে আছড়ে পড়ছে গুলি, মর্টার শেল বা অন্যান্য অস্ত্রের খণ্ডিত অংশ। ভারী অস্ত্র ও গোলাবারুদ বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে উঠছে এলাকা। এবার আবারও সেন্টমার্টিনে শোনা গেল সেই বিস্ফোরণের শব্দ।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকাল থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত রাখাইনের মংড়ু টাউনশিপের দক্ষিণের গ্রাম হাস্যুরাতে অন্তত ৪০টি মর্টার শেলের বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) প্যানেল চেয়ারম্যান আক্তার কামাল বলেন, ‘আমি বিকেল পর্যন্ত ৪০টিরও বেশি মর্টার শেল বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছি। বিস্ফোরণের কারণে দ্বীপে প্রবল কম্পন দেখা দেয়, যা ভূমিকম্পের সময়েও হয় না। আতঙ্কে দ্বীপের বাসিন্দারা ছোটাছুটি শুরু করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি জেনেছি হাস্যুরাতে আরাকান আর্মির অবস্থানে সরকারি বাহিনী হামলা শুরু করেছে। বঙ্গোপসাগরের মিয়ানমারের জলসীমানায় সেদেশের নৌবাহিনীর একটি যুদ্ধ জাহাজও অবস্থান নিয়েছে। সেন্টমার্টিন জেটি ঘাটে দাঁড়িয়ে হাস্যুরাতের দৃশ্য খালি চোখেই দেখা যাচ্ছে।’
নাম-প্রকাশে অনিচ্ছুক সেন্টমার্টিনের এক বাসিন্দা বলেন, ‘শুক্রবার দুপুরে সবচেয়ে বেশি মর্টার শেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শুনে মনে হচ্ছিল সেন্টমার্টিন দ্বীপেই মর্টার শেল এসে পড়েছে।’
টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘শুক্রবার সকালে শাহপরীর দ্বীপের বিপরীতে নাফ নদীর মিয়ানমার জলসীমায় একটি বড় জাহাজের অবস্থান দেখা গেছে। দুপুরের আগেই জাহাজটি সেখান থেকে দক্ষিণে সরে গিয়ে সেন্টমার্টিনের বিপরীতে অবস্থান নেয়। রাখাইনের পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফ নদী ও সীমান্তে বিজিবির টহল বাড়ানো হয়েছে।’