রাষ্ট্রীয় বাহিনী আমাদের ধাওয়া করছে: ছাত্রদল

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগস্ট ২৫, ২০২৩, ১২:২৩ এএম

রাষ্ট্রীয় বাহিনী আমাদের ধাওয়া করছে: ছাত্রদল

ছবি: দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ

নিজেদের জীবনের চেয়ে রাষ্ট্র নিয়ে আমরা বেশি উদ্বিগ্ন এমন মন্তব্য করে ছাত্রদলের নেতারা অভিযোগ করেছেন, এক যুগের বেশি সময় ধরে আমাদের অনেক নেতাকর্মী বাড়িতে যেতে পারে না। অনেকে দুই ঘণ্টা নিদ্রায় যেতে পারে না। সব সময় রাষ্ট্র বাহিনী আমাদের পেছনে ধাওয়া দিয়ে বেড়াচ্ছে। আমাদের জীবন নিয়ে উদ্বিগ্ন নই, আমরা উদ্বিগ্ন আমাদের রাষ্ট্র নিয়ে। হাজারো শিক্ষার্থীর জীবন নিয়ে। 

বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের নেতারা এ কথা জানান।

সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান বলেন, গণতন্ত্রের পক্ষে, গণমানুষের ভোটাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠায়, সাম্য-মানবিক মর্যাদা-সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠার লড়াই যত বেগবান হচ্ছে, শহীদের সংখ্যা, গ্রেপ্তারের সংখ্যা, আহতের সংখ্যা, পঙ্গুত্বের সংখ্যা, গুমের সংখ্যা, অস্ত্র উদ্ধারের মতো দুর্বল স্ক্রিপ্টের নাটকের সংখ্যা ততো বেশি দীর্ঘতর হচ্ছে। কিন্তু আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা স্পষ্ট চিত্তে বলতে চাই, অবৈধ ক্ষমতার দখলদারদের এ ধরনের নিপীড়ন-নির্যাতন, মোসাহেবদের হুমকি-ধমকি, নানান কল্পকাহিনী সাজানোতে আমরা ন্যূনতমও বিচলিত নই। গণতন্ত্রের পক্ষে আমাদের যে রক্তস্নাত পথচলা, সেই পথচলা কোনো কিছুতেই থামবেনা, থামানো যাবে না।

রাশেদ ইকবাল খান আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি বিএনপি সহিংসতার জন্য অস্ত্র সংগ্রহ করছে বলে বক্তব্য দিয়েছেন। এই বক্তব্যের পরই তাঁর বক্তব্যের সত্যতা প্রমাণে মাঠে নেমে পড়েছে কিছু অতি উৎসাহী গোয়েন্দা কর্মকর্তা।’

এই ছাত্রদল নেতা অভিযোগ করেন, ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতা মমিনুল ইসলাম জিসানকে এবং ‘হাসপাতালে রোগী দেখা শেষে বের হওয়ার পথে’ ছাত্রদলের সহসভাপতি আবুল হাছান চৌধুরীকে তুলে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশের সদস্যরা। জিসানকে খুঁজতে গেলে ছাত্রদল নেতা শাহাদাত হোসেন, হাসানুর রহমান, আব্দুল্লাহ আর রিয়াদ এবং সাবেক নেতা জহির উদ্দিন বাবর ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা আরিফ বিল্লাহকে আটক করা হয়।

তিনি বলেন, ‘বেআইনিভাবে দীর্ঘ সময় আটক রাখার পর বিএনপি মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো সরব হয়ে উঠলে একপর্যায়ে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তারের নাটক সাজিয়ে তাদের গণমাধ্যমের সামনে উপস্থাপন করা হয়। আমরা জীবন নিয়ে উদ্বিগ্ন নই, আমরা উদ্বিগ্ন আমাদের রাষ্ট্র নিয়ে; হাজারো শিক্ষার্থীর জীবন নিয়ে।’

রাশেদ ইকবাল আরও বলেন, ‘আজ এই অবৈধ সরকার আর তার মোসাহেবরা মিলে আমাদেরকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে তা আমাদের ভাবতে হবে। আমরা কোনোভাবেই উত্তর কোরিয়া, কাতারের রাষ্ট্র হতে চাই না। আজ বৈশ্বিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো বাংলাদেশকে নিয়ে ক্রমাগত উদ্বেগ জানাচ্ছে, স্যাংশন আসছে, ভিসা নিষেধাজ্ঞা আসছে, আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র হয়ে উঠছে বাংলাদেশ। এই সবকিছুরই মূল হচ্ছে, একতরফা অবৈধ কারচুপির ভোটচুরির নির্বাচন। একজন ব্যক্তির স্বেচ্ছাচারিতায় তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থাকে বিলোপ করেই দেশকে আজকের পর্যায়ে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।’

Link copied!