আগস্ট ১৩, ২০২৪, ০৬:৪৫ পিএম
১৫ বছর এই ফোর্সগুলোকে যারা দানব বানিয়েছে, তাদের আন্তর্জাতিক আদালতে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেছেন, “তারা কত লোক মেরেছে। প্রত্যেকটি ইনস্টিটিউশন ধ্বংস করেছে। এগুলো ন্যাশনাল ফোর্স, কারও পারসোনাল ফোর্স নয়।”
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) দুপুর পৌঁনে ১২টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আহত বিজিবি সদস্যদের দেখতে পিলখানায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদর দপ্তরে বিজিবি হাসপাতালে খোঁজ-খবর নেওয়ার পর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “দেশের সীমান্তে ঢুকে মানুষ মারলেও পতাকা বৈঠক করে বলা হতো সব ঠিক হয়ে গেছে, সেই দিন শেষ হয়ে গেছে।”
বিজিবির উদ্দেশে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “বিজিবির মতো একটা ফোর্সকে (বাহিনী) পিঠ দেখাতে বলেছে সীমান্তে। সীমান্তে আমাদের লোক মারে, বিজিবি পতাকা বৈঠক করতে বাধ্য হয়। আমি বলেছি যে পিঠ দেখাবেন না। এনাফ ইজ এনাফ।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের সীমানার মধ্যে ঢুকে মারে, আর আমরা বলি, পতাকা বৈঠক করেছে, সব ঠিক হয়ে গেছে বা আমি জানি না। দ্যাট ডেজ আর ওভার।”
পুলিশ বাহিনী প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “পুলিশ খুবই অনুতপ্ত। এখানে (পিলখানা) আসার সময়ও দেখলাম, পুলিশের সঙ্গে ছাত্ররা কাজ করছে। পুলিশকে দানব বানানো হয়েছে। যারা এটি করেছে তাদের আমরা ভুলে যাব না। অবশ্যই বিচার করা হবে।”
সোমবার (১২ আগস্ট) নিজের বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “অনেক কথার মধ্যে অনেক কথা চলে আসে। যদি আমি এমন কোনও কথা বলে থাকি, সেটা ভুল বুঝেছেন, সেটার জন্য আমি দুঃখিত।”
১৫ আগস্ট নিয়ে জানতে চাইলে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ বিকেলে আমরা বসব, সেখানে আলোচনা হবে। তবে আমরা সব ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করব। পুলিশ থাকবে, বিজিবি-র্যাব থাকবে। হয়তো সেনাবাহিনীও থাকবে।”
ছাত্রদের উদ্দেশে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “তোমাদের আন্দোলন কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না। এই আন্দোলনের তো ইমেজ (ভাবমূর্তি) আছে।”
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “যাদের কথা বলা হচ্ছে, তাদের সবার লিস্ট (তালিকা) আমাদের কাছে আছে। দু-এক দিনের মধ্যে আপনারা অ্যাকশন (ব্যবস্থা) দেখবেন।”
তিনি আরও বলেন, “অস্ত্র ফেরত দিতে বলেছি। যদি জমা না দিয়ে ধরা পড়েন, তাহলে দুই রকমের শাস্তি পাবেন। নিষিদ্ধ অস্ত্র ছিনতাই এবং নিষিদ্ধ অস্ত্র পাওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত হবেন। সুতরাং নিজেরা ভয়ে আসতে না পারলে অন্য কাউকে দিয়ে জমা দেন।”
পুলিশের পোশাক প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “আমরা যত দ্রুত সম্ভব ইউনিফর্ম চেঞ্জ (পোশাক পরিবর্তন) করতে চাই। ভবিষ্যতে যেন মানবিক পুলিশ হয়, সে জন্য আমরা পুলিশ কমিশন গঠনের চিন্তাভাবনা করছি।”
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক ঘটনায় বিজিবির তিন সদস্য নিহত ও ১৩০ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া আন্দোলনে বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। এদের মধ্যে তিনজনকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে এবং তিনজন শিক্ষার্থী বর্তমানে বিজিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।