জুলাই ২২, ২০২৫, ০৪:৪৩ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে বের হওয়ার পর দিয়াবাড়ি মোড়ে শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে পড়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব। সেখান থেকে তাদের গাড়ি ঘুরিয়ে আবার কলেজ ক্যাম্পাসে নেওয়া হয়েছে। দুই উপদেষ্টা ও প্রেস সচিব কলেজের ভেতরে একটি ভবনে গিয়েছেন।
কলেজের বাইরে ও আশপাশের এলাকায় শত শত শিক্ষার্থী বিক্ষোভ করছেন। তারা আইন উপদেষ্টা ও শিক্ষা উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেন।
মঙ্গলবার, ২২ জুলাই বেলা সাড়ে তিনটার কিছু আগে কলেজ থেকে বের হন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। এ সময় কলেজের সামনে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদেরও দেখা যায়নি। উপদেষ্টাদের গাড়ি দিয়াবাড়ি মোড়ে গেলে বিকেল পৌনে চারটার দিকে বাধা দেয় শিক্ষার্থীরা।
এর আগে বেলা পৌনে একটার দিকে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক। সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস দিচ্ছি, আমরা প্রতিটা দাবি পূরণ করব। বিশ্বাস রাখেন।’ তবে উপদেষ্টার বক্তব্যের পরও বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকে শিক্ষার্থীরা। এ সময় উপদেষ্টারা আবার কলেজের ভেতরে ঢুকে যান। ক্যাম্পাসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এ সময় অবস্থান করতে দেখা গেছে।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, সি আর আবরার, প্রেস সচিব শফিকুল আলম কলেজ পরিদর্শনে আসেন। সেখান থেকে বের হয়ে আসার সময় শিক্ষার্থীরা তাদের ঘিরে ধরে। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করতে থাকে।
দুই উপদেষ্টা পরে কলেজের ৫ নম্বর ভবনের নিচতলায় কনফারেন্স কক্ষে যান। তাদের সঙ্গে কলেজের শিক্ষকেরাও ছিলেন। সেখানে পাঁচ থেকে সাতজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধির সঙ্গে তাদের আলোচনা চলে। এ সময় বাইরে শত শত শিক্ষার্থীকে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।
বেলা পৌনে একটার দিকে উপদেষ্টারা কনফারেন্স কক্ষ থেকে বের হয়ে আসেন। এ সময় উপদেষ্টা আসিফ নজরুল শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন। অভিভাবক হিসেবে ভালোবাসা জানাতে এসেছেন বলে জানান। এদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস উইং এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, শিক্ষার্থীদের ছয়টি দাবির প্রত্যেকটিই যৌক্তিক।
শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবিতে বিক্ষোভ করছেন। এসব দাবি হলো, নিহত ব্যক্তিদের সঠিক নাম-পরিচয় প্রকাশ; আহত ব্যক্তিদের সম্পূর্ণ ও নির্ভুল তালিকা; শিক্ষার্থীদের প্রতিটি পরিবারকে ক্ষতিপূরণ; বিমানবাহিনীর ব্যবহৃত ঝুঁকিপূর্ণ ও পুরোনো প্রশিক্ষণ বিমান বাতিল করে আধুনিক ও নিরাপদ বিমান চালু এবং বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ পদ্ধতি ও কেন্দ্র সংস্কার করে আরও মানবিক ও নিরাপদব্যবস্থা চালু, শিক্ষকদের গায়ে সেনাবাহিনীর সদস্যদের হাত তোলার ঘটনার জন্য জনসমক্ষে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া।
গতকাল সোমবার দুপুরে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিধ্বস্ত হয়। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) বলেছে, রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত মোট ৩১ জন নিহত ও ১৬৫ জন আহত হয়েছেন।