পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে গোপন কক্ষে সিল মারা ব্যালটের সঙ্গে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন আশরাফুল ইসলাম নামের এক ইউপি চেয়ারম্যান। এ ঘটনায় তাকে নিয়ে বেশ কিছু গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসে।
এর আগে বুধবার (৮ মে) জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের মাঝিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন তিনি।
আশরাফুল ইসলাম তেঁতুলিয়া উপজেলার শালবাহান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান। এছাড়া তিনি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য।
এ ঘটনায় স্থানীয় সরকারের একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে এ ধরনের কর্মকাণ্ডে কেন আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে না মর্মে গত ১২ মে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দিয়েছেন তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফজলে রাব্বি।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ৮ মে উপজেলায় ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনের দিন আপনি তেঁতুলিয়া উপজেলাধীন ৪ নম্বর শালবাহান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান হিসেবে শালবাহান ইউনিয়নের মাঝিপাড়া দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের গোপন কক্ষে ভোট প্রদানের সময় নিজের ও মার্কিং সিলসহ ব্যালট পেপারের ছবি ধারণ করে আপনার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে আপলোড করেছেন। যা নির্বাচনী আচরণ বিধিমালার পরিপন্থী। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন জাতীয়, স্থানীয় পত্রিকা, টেলিভিশন চ্যানেল এবং অনলাইন পোর্টালে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
তাই স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ এর ১০৭ ধারা অনুযায়ী জনসেবক হওয়া সত্ত্বেও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে ভোটকেন্দ্রের গোপন কক্ষে ভোট প্রদানের সময় নিজের ও মার্কিং সিলসহ ব্যালট পেপারের ছবি ধারণ করে ভোটকেন্দ্রের বাইরে এসে জনসাধারণ ও সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুক আইডিতে প্রদর্শন করেন। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে লাইভে এসে বিবৃতি দেন। যা জনসাধারণের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ এর ৩৪ এর (৪) ধারার (খ) ও (ঘ) উপ-ধারা মোতাবেক অসদাচরণের শামিল। সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা, ২০১৯-এ প্রদত্ত নির্দেশনা অনুসরণের পরিপন্থী মর্মে প্রতীয়মান হয়েছে। তাই এমন কর্মকাণ্ডের দায়ে আপনার বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯-এর ৩৪ ধারা অনুযায়ী পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর কেন সুপারিশ করা হবে না এর সন্তোষজনক ব্যাখ্যা ১৬ মে তারিখের মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে দাখিলের অনুরোধ করা হলো।’
ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম বলেছিলেন, “দেশের অনেক জায়গায় এই ধরনের পোস্ট করতে দেখেছি। কই তাদেরকে তো কোনো কিছু করা হয়নি।”