সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৫, ০৫:৪০ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রামের শাহ আমানত আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন বিমান বাহিনীর জহুরুল হক ঘাঁটিতে মার্কিন সামরিক বিমান এবং বন্দরনগরীর একটি হোটেলে মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেসব আলোচনা চলছে তা নাকচ করে দিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর-আইএসপিআর।
আইএসপিআর বলছে, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক এয়ার ফোর্সের অংশগ্রহণে সাত দিনব্যাপী যে যৌথ মহড়া চলছে, তার অংশ হিসেবেই মার্কিন সেনারা চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন।
চট্টগ্রামের বিমানবাহিনী ঘাঁটি জহুরুল হকে ‘অপারেশন প্যাসিফিক অ্যাঞ্জেল ২৫-৩’ নামের এই যৌথ মহড়ার উদ্বোধন করা হয় গত রোববার। ঘাঁটি জহুরুল হকের অধিনায়ক, এয়ার ভাইস মার্শাল হায়দার আব্দুল্লাহ মহড়ার উদ্বোধন করেন। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর কর্মকর্তাদের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক এয়ার ফোর্সের সদস্যরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
বাসসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি সি-১৩০জে পরিবহন বিমান, একটি এমআই-১৭ হেলিকপ্টার এবং যুক্তরাষ্ট্রের দুটি সি-১৩০জে পরিবহন বিমান এ মহড়ায় অংশ নিচ্ছে।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ১৫০ জন সদস্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের ৯২ জন সদস্য ছাড়াও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর সদস্যরা অংশ নিচ্ছেন এ মহড়ায়।
মহড়ার মূল কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে মেডিভ্যাক (উদ্ধার অভিযান) সমন্বয়, বিমান রক্ষণাবেক্ষণ ও বৈমানিক কার্যক্রম, প্যারাসুট ও লিটার রিগিং, রোটারি-উইং হোইস্ট অপারেশন, সামুদ্রিক ও বন্যা মোকাবিলা কার্যক্রম, কমব্যাট রাবার রেইডিং ক্রাফট (সিআরআরসি), জঙ্গল সারভাইভাল ও দুর্ঘটনাস্থল ব্যবস্থাপনা এবং মানবিক সহায়তা ও দুর্যোগ প্রতিরোধ (এইচএডিআর)।
বিমানবাহিনীর ঘাঁটি জহুরুল হকে মার্কিন সি-১৩০জে পরিবহন বিমানের ছবি ও ভিডিও ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বুধবার নানারকম গুঞ্জন শুরু হয়। মার্কিন সেনারা চট্টগ্রামের হোটেল র্যাডিসন ব্ল তে উঠেছেন-এমন কথাও ছড়িয়ে পড়ে।
এসব গুঞ্জনের মধ্যে এই মহড়া নিয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরতে বৃহস্পতিবার একটি সাংবাদিক সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন আইএসপিআরের কর্মকর্তারা।
আইএসপিআর বলছে, দুই দেশের বিমান বাহিনীর পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি, পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময়, আন্তঃকার্যক্ষমতা জোরদার করা এবং সহযোগিতা শক্তিশালী করা এ মহড়ার উদ্দেশ্য।
পাশাপাশি মহড়ার মাধ্যমে বিমান বাহিনী, চিকিৎসা, প্রকৌশল ও লজিস্টিক বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে স্থানীয় জনগণকে সেবা দেওয়া হবে, যা দুই দেশের মধ্যে আস্থা ও বন্ধন আরও দৃঢ় করবে বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষ।
মহড়া চলাকালে বিভিন্ন বাস্তবমুখী অনুশীলন এবং জরুরি প্রতিক্রিয়া পরিস্থিতি আয়োজন করা হচ্ছে, যাতে অংশগ্রহণকারী সদস্যরা বাস্তব পরিস্থিতিতে দ্রুত এবং কার্যকরভাবে সমন্বয় ও উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করতে সক্ষম হন। এর ফলে দুই দেশের বিমান বাহিনীর মধ্যে সমন্বয়, কৌশলগত পরিকল্পনা এবং মানবিক সহায়তার কার্যক্রমের দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে।
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের শার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন মঙ্গলবার ঘাঁটি জহুরুল হকে গিয়ে মহড়া পরিদর্শন করেন। পরে তিনি দুই দেশের বিমান বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
সাত দিনের এই মহড়া বৃহস্পতিবার শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।