আগস্ট ২৬, ২০২১, ০৪:০৮ পিএম
‘ভুয়া’ জন্মদিন পালন ও যুদ্ধাপরাধীদের মদদ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধকে ‘কলঙ্কিত’ করার অভিযোগে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা পৃথক দুই মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন আগামী ৫ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট)ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নুর অভিযোগ গঠনের দিন ধার্য করেন
আদালতের পেশকার শাহাদাত হোসেন বিষয়টি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, মামলাটির অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় অভিযোগ গঠন হয়নি। আদালতের কার্যক্রম স্বাভাবিক হওয়ায় অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য নতুন দিন ধার্য করেছেন বিচারক।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ‘ভুয়া জন্মদিন’ পালনের অভিযোগ এনে ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট মামলাটি করেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক গাজী জহিরুল ইসলাম।২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট তিনি এই মামলাটি করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার একাধিক জন্মদিন নিয়ে ১৯৯৭ সালে দুটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর এসএসসি পরীক্ষার মার্কশিট অনুযায়ী তার জন্ম তারিখ ১৯৪৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর। ১৯৯১ সালে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে একটি দৈনিকে তার জীবনী নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জন্মদিন ১৯৪৫ সালের ১৯ আগস্ট লেখা হয়। তার বিয়ের কাবিননামায় জন্মদিন ১৯৪৪ সালের ৪ আগস্ট। সর্বশেষ ২০০১ সালে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট অনুযায়ী তার জন্মদিন ১৯৪৬ সালের ৫ আগস্ট।
মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়, বিভিন্ন মাধ্যমে তার পাঁচটি জন্ম তারিখ পাওয়া গেলেও কোথাও ১৫ অগাস্ট জন্মদিন পাওয়া যায়নি। অথচ ১৯৯৬ সাল থেকে তিনি ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীর দিন জাতীয় শোক দিবসে জন্মদিন পালন করে আসছেন। পরে এ মামলা আমলে নিয়ে ২০১৬ সালের ১৭ নভেম্বর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
এছাড়া যুদ্ধাপরাধীদের মদদ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধকে ‘কলঙ্কিত’ করার অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বাদী হয়ে অপর মামলাটি করেন বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের সঙ্গে জোট করে নির্বাচিত হয়ে সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন বিএনপি চেয়ারপারসন। তিনি (খালেদা জিয়া) রাজাকার-আলবদর নেতাকর্মীদের মন্ত্রী-এমপি বানিয়ে তাদের বাড়ি-গাড়িতে স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র ও জাতীয় পতাকা তুলে দেন।
পরে ২০১৭ সালের ১২ নভেম্বর এ মামলাতেও খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। এছাড়া ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন। এর পরের বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে প্রতিবেদন দেন। এ মামলার অন্য আসামি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান মৃত হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
তবে পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ এর আদালত এ দুই মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন মঞ্জুর করেন।