জুন ১৭, ২০২৩, ০৮:৪১ পিএম
নিজের অপকর্ম নিয়ে প্রতিবেদন করায় ক্ষিপ্ত হয়ে উচিত শিক্ষা দিতে ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর পরিকল্পনায় সাংবাদিক গোলাম রব্বানি নাদিমকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান।
এর আগে, সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটের দিকে জামালপুরের বকশীগঞ্জে সাংবাদিক নাদিম হত্যার ঘটনায় পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ থেকে গ্রেফতার হওয়া সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুকে কারওয়ানবাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আনা হয়।
পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নিয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি জানান, বাবুকে জামালপুরে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখান থেকে তাকে বকশীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হবে।
গ্রেফতার বাবুকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের সূত্র ধরে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সাংবাদিক নাদিম সম্প্রতি বাবুর অপকর্ম নিয়ে অনলাইন নিউজ পোর্টালে কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বাবু সাংবাদিক নাদিমকে বিভিন্নভাবে হুমকিসহ তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করে। পরবর্তীতে ময়মনসিংহের সাইবার ট্রাইব্যুনাল মামলাটি খারিজ করে দেন। মামলা খারিজের বিষয়টি নিয়ে ভিকটিম নাদিম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিলে বাবু আরও ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ি গত ১৪ জুন রাত আনুমানিক ১০টার দিকে ভিকটিম নাদিম বাড়ি ফেরার পথে বকশীগঞ্জ বাজারের পাটহাটি এলাকায় বাবু তার সন্ত্রাসীদের নিয়ে নির্জন স্থানে ওঁৎ পেতে থাকে। ভিকটিম নাদিম তার সহকর্মীসহ মোটরসাইকেল যোগে ঘটনাস্থলে পৌঁছলে বাবুর সন্ত্রাসীরা তাকে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। পরে পেছন থেকে বাবুর আরও কয়েকজন লোক এসে তাকে মারতে মারতে পাশের একটি অন্ধকার গলিতে টেনেহেচড়ে নিয়ে যায় এবং এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকে। ওই সময় বাবু ঘটনাস্থলে থেকে পুরো ঘটনার নেতৃত্ব দেন। ভিকটিম নাদিমের সহকর্মী তাকে বাঁচাতে আসলে বাবু ও তার সহযোগিরা তাকেও মারধর করে। একপর্যায়ে ভিকটিম নাদিমের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে বাবু ও তার সন্ত্রাসী গ্রুপ দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরের দিন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধান অবস্থায় সাংবাদিক নাদিমের মৃত্যু হয়।
প্রসঙ্গত, সাংবাদিক নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম বাদী হয়ে ইউপির চেয়ারম্যান বাবুকে প্রধান আসামি করে ২২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২৫ জনকে আসামি করে বকশীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।