সাভারে শিক্ষার্থীর আঘাতে গুরুতর আহত শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার (৩৫) চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার ভোর সোয়া ৫টার দিকে সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে মারা গেছেন।
দুপুরে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে আশুলিয়া থানার এসআই এমদাদুল হক জানান।
নিহত উৎপল কুমার সরকার (৩৭) সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানার এঙ্গেলদানি গ্রামের মৃত অজিত সরকারের ছেলে। তিনি আশুলিয়ার চিত্রশাইল এলাকায় হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক এবং শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থী একই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। গত শনিবার (২৫ জুন) দুপুর ২টার দিকে ওই স্কুল মাঠে শিক্ষককে স্ট্যাম্প দিয়ে বেধড়ক মারধর করে সে।
হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল হাসান জানান, আমরা প্রতি বছর ছেলেদের ফুটবল ও মেয়েদের ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করি। এবারও এই আয়োজন করা হয়েছিলো। শনিবার মেয়েদের ক্রিকেট খেলা চলছিলো। এ সময় প্রতিষ্ঠানের দুই তলা ভবনের বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছেলেরা খেলা দেখছিলো। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীও দুই তলায় খেলা দেখছিলো। সকাল থেকেই তার হাতে স্ট্যাম্পটি ছিলো বলে জানতে পেরেছি।
হঠাৎ সে দুই তলা থেকে নেমে মাঠের এক পাশে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষক উৎপলকে স্ট্যাম্প দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। পরে আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই আজ ভোর সোয়া ৫টার দিকে মারা যান ওই শিক্ষক।
নিহতের ভাই অসীম কুমার সরকার বলেন, প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি ওই শিক্ষার্থী মেয়েদের ইভটিজিংসহ নানা উচ্ছৃঙ্খল কাজ করতো। এ কারণে তাকে শাসন করায় আমার ভাইকে মেরে ফেলেছে। আমি প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর কাছে এর উপযুক্ত বিচার চাই।
আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এমদাদুল হক বলেন, নিহত শিক্ষক প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি থাকায় নিয়ম কানুন মানাতে শিক্ষার্থীদের শাসন করতেন। তিনি ওই শিক্ষার্থীকেও শাসন করায় এ ঘটনা ঘটেছে বেলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে মামলা করেছেন। অভিযুক্তসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। আমরা তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি।
উৎপল ঢাকার মিরপুরে পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।