সোমবার বিকেলে অ্যাপ ও নিবন্ধনের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হবে বলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এন এম জিয়াউল আলম জানিয়েছেন। ভারতের উপহার হিসেবে পাঠানো সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ২০ লাখ ডোজ টিকা ইতোমধ্যে দেশে এসেছে। সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে সরকারের কেনা তিন কোটি ডোজ টিকার প্রথম চালানে ৫০ লাখ ডোজ টিকাও সোমবার দেশে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী সারা দেশে এই গণ টিকাদান শুরু হবে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে। তার আগে ২৭ জানুয়ারি ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের একজন নার্সকে সবার আগে টিকা দেওয়া হবে, যার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। সেদিন আরও ২৪ জনকে টিকা দেওয়া হবে। পরদিন ঢাকার পাঁচটি হাসপাতালে আরও ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে টিকা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
বাংলাদেশ সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিলেও যেহেতু এখানে এ টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হয়নি, তাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুযায়ী প্রথম দফায় টিকা পাওয়া সবাইকে এক সপ্তাহ পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। এরপার ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে সারা দেশে টিকাদান কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের।
টিকা পেতে আগ্রহী সবাইকে অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে; সেজন্য একটি অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে, যার নাম দেওয়া হয়েছে সুরক্ষা অ্যাপ।
অনলাইনে নিবন্ধন
জ্যেষ্ঠ সচিব এন এম জিয়াউল আলম জানান, করোনাভাইরাসের টিকা পেতে আগ্রহীরা সুরক্ষা প্ল্যাটফর্মের ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনে (www.surokkha.gov.bd) গিয়ে অথবা মোবাইলে অ্যাপ ডাউনলোড করে নিবন্ধনের কাজটি সারতে পারবেন।
‘রিয়েল টাইম’ অ্যাপটি ফ্রি ডাউনলোড করা যাবে। নিবন্ধনের পর সেখান থেকেই জানা যাবে, কবে কখন টিকা নিতে হবে। যেহেতু অপ্রাপ্তবয়স্কদের ওপর অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হয়নি, তাই ১৮ বছরের কম বয়সীদের টিকার জন্য নিবন্ধন করা হবে না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর করোনাভাইরাসের টিকার প্রাপ্যতা অনুযায়ী মাসভিত্তিক বিতরণ তালিকা তৈরি করেছে। সেখানে প্রথম ফেইজের প্রথম স্টেইজে মোট জনসংখ্যার ৮ দশমিক ৬৮ শতাংশ, অর্থাৎ ১ কোটি ৫০ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
ভারত সরকারের উপহার হিসেবে ২০ লাখ ডোজ টিকা বাড়তি পাওয়ায় প্রথম মাসে ৭০ লাখ টিকা হাতে আসার কথা। সেখান থেকে ৬০ লাখ ডোজ টিকা দেওয়া হবে; পরের মাসে দেওয়া হবে ৫০ লাখ ডোজ।
প্রথম মাসে সবার আগে টিকা পাবেন ৪ লাখ ৫২ হাজার ২৭ জন সরকারি স্বাস্থ্যকর্মী। এছাড়া কোভিড-১৯ স্বাস্থ্য সেবায় সরাসরি নিয়োজিত অনুমোদিত সব বেসরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানের ছয় লাখ স্বাস্থ্যকর্মী প্রথম ধাপেই টিকা পাবেন।
টিকা অগ্রাধিকার তালিকায় আছেন ২ লাখ ১০ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধা, সামরিক ও বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর ১ লাখ ৮০ হাজার ৪৫৭ জন, রাষ্ট্র পরিচালনায় অপরিহার্য কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ২৫ হাজার জন, সম্মুখসারির ২৫ হাজার জন গণমাধ্যমকর্মী, ৮৯ হাজার ১৪৯ জন জনপ্রতিনিধি, সিটি করপোরেশন এবং পৌরসভার ৭৫ হাজার জন কর্মচারী, মৃতদেহ সৎকারে নিয়োজিত কর্মীদের মধ্যে ৩৭ হাজার ৫০০ জন।
এছাড়া পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পয়োনিষ্কাশন, ফায়ার সার্ভিস এবং বিমানবন্দরের ২ লাখ কর্মী, স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরের ৭৫ হাজার জন, ৬০ হাজার প্রবাসী অদক্ষ শ্রমিক, জেলা-উপজেলায় জরুরি জনসেবায় নিয়োজিত ২ লাখ সরকারি কর্মচারি এবং ফুটবল,
হকি, ক্রিকেট মিলিয়ে জাতীয় দলের ১০ হাজার ৯৩২ জন খেলোয়াড় প্রথম মাসেই টিকা পাবেন।