ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৩, ০৫:৩৬ পিএম
আসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিসহ সব দলের অংশগ্রহণ এবং নির্বাচন সুষ্ঠু-সুন্দর ও নিরপেক্ষ হোক তা ইউরোপিয় ইউনিয়ন দেখতে চায় বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তবে নির্বাচনে বিদেশিদের কোনো ‘নির্দেশনা’ দেখবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে ইইউ অ্যাম্বাসেডরস রেসিডেন্স অ্যাপার্টমেন্টে সাতটি দেশের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।
বৈঠক শেষে নির্বাচন এবং তাতে বিএনপির অংশগ্রহণ নিয়ে ইইউ কী বলেছে, তাও সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
ওবায়দুল কাদের বলেন, “ইইউ এর সাতটি দেশের সঙ্গে কথা বলেছি। আগামী নির্বাচন সামনে রেখে রোলিং পার্টি হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আজকে বৈঠকে আসা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যরাও চায় বিএনপিসহ সকল দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক এবং সুষ্ঠু-সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক।"
আসছে জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কি কথা হয়েছে-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, "নির্বাচন নির্বাচনের গতিতেই হবে। আগামী নির্বাচন বিশ্বাসযোগ্য ও সুষ্ঠু হবে, নির্বাচন কমিশন স্বাধীন কর্তৃত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
তিনি আরও বলেন, “নির্বাচনকেন্দ্রিক বিদেশিদের কোনো নির্দেশনা আওয়ামী লীগ অনুসরণ করবে না। আওয়ামী লীগ ত্রুটিমুক্ত, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায়। এজন্য বর্তমান সরকার যা যা করণীয় তাই করবে।"
এক প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, “যে দল সংলাপে প্রেসিডেন্টের নির্দেশ উপেক্ষা করে। এমনকি ইলেকশন কমিশন তাদেরকে (বিএনপি) দুইবার সংলাপে আমন্ত্রণ করেছে। তবে সংলাপের ব্যাপারে বিএনপির বরাবরই একটা অনাগ্রহ রয়েছে। আসলে মনের দিক থেকে বিএনপি ইলেকশনে যেতে ইচ্ছুক নয়। কারণ তারা জানে নির্বাচনে শেখ হাসিনা এবং তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগই আবার ক্ষমতায় আসবে। তাই হেরে যাওয়ার ভয়ে বিএনপি কূটকৌশল অবলম্বন করছে।”
এসময় তিনি বলেন, “আমাদের কাছে তথ্য আছে। বিএনপি ২০১৪-১৫ সালের মতো আবারও আগুন সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদের ওপর ভর করে সরকার উৎখাতের পরিকল্পনা করছে। বিএনপি আন্দোলনের নামে দেশের স্থিতিশীলতাকে নষ্ট করছে। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে ক্ষমতা দখলের পায়তারা করছে।”
আগামী নির্বাচন নিয়ে ইউরোপিয় ইউনিয়নের দেশগুলো যা বলছে এ বিষয়ে ক্ষমতাসীন দল হিসেবে আপনাদের মতামত কী-এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “আমরা একটা কথা পরিষ্কারভাবে বলেছি যেটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল (বুধবার) তার বক্তব্যে বলেছেন আগামী নির্বাচন বিশ্বাস যোগ্য, সুষ্ঠু, অবাধ হবে। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন কর্তৃত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং নির্বাচন কমিশনকে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করবে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে আজকে আমাদের বক্তব্যের কোনো ভিন্নতা নেই। উনি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) যা বলেছেন আমরা তাই প্রতিধ্বনি করেছি। একই সঙ্গে আমরা আগামী নির্বাচন সামনে রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু করতে ইই ‘র কোনো মতামত বা নির্দেশনা ছিল কিনা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমরা তো কারো নির্দেশনা শুনব না। আমাদের নির্দেশনা আমাদের সংবিধান এবং আমাদের গঠনতন্ত্র। যা আমরা ফলো করি। আমাদের দেশে ইলেকশনের যত রিফর্ম হয়েছে তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে এবং তার উদ্যোগেই হয়েছে। এমনকি ইলেকশনের জন্য একটি আইন ও সংসদে পাস হয়েছে।”
বর্তমান সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কিনা এ বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কি মত দিয়েছে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা তাদের সঙ্গে খুব ফলপ্রসূ আলাপ আলোচনা করেছি। এখন তারা কী ভাবছে এটা তাদের বিষয়। তবে বিএনপি আগামী নির্বাচনে আসুক এটা তারা চায়। তারা চাচ্ছে বাংলাদেশে সকল নিবন্ধিত দলের একটা অংশগ্রহণ মূলক ইলেকশন হোক।”
বিএনপিকে আগামী নির্বাচনে আনার ব্যাপারে ইইউর কোনো পরামর্শ ছিল কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, “তারা (বিএনপি) এখানে মাঝে মধ্যেই আসে। আমরা তা দেখতে এবং শুনতে পাই। তারা তো চুপিচুপি আসে। গোপনে গোপনে আসে।”