থার্টি ফাস্ট উদযাপনে ফানুস ও আতশবাজির পরিপ্রেক্ষিতে দেশের দুই শতাধিক স্থানে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। দেশে বিদ্যমান আইনে বিস্ফোরক দ্রব্য বহন, আমদানি ও ক্রয় করা নিষেধ থাকলেও সহজেই মিলছে এই সব বিস্ফোরক পণ্য। দেশে নিশিদ্ধ পটকা বা আতশবাজি, রয়েছে শাস্তির বিধান কিন্তু প্রয়োগ করা হয়না।
শিল্প কারখানা থেকে অসাধু ব্যবসায়ীরা পণ্য আনছে
বিস্ফোরক পরিদপ্তরের পরিদর্শক ড. মো. আব্দুল হান্নান (চ.দা.) দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে বলেন, পটকা সরাসরি আমদানি করা হয়না। পটকা তৈরির উপাদান দেশের ইন্ডাস্ট্রিয়াল কাজে আমদানী করা হয়। যেমন অ্যালুমিনিয়াম পাউডার। এটা যদি না আনে তাহলে তো বাসন বানানো যাবে না। এইগুলা আমদানি করতে আমদানি নীতি আদেশ অনুসারে আনতে হয়। বিস্ফোরক অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিতে হয়। সেখান থেকে হয়ত অসাধু ব্যবসায়ীরা এই ধরনের পণ্য কিনে থাকে।
তিনি আরো বলেন, আর্মস এয়াক্ট ১৮৭৮ মোতাবেক একটা আইন আছে। এছাড়া ১৮৮৪ এর ধারা অনুযায়ী বিস্ফোরক আইনে দণ্ডের ব্যবস্থাও রয়েছে। এই আতশবাজি বিক্রয় কিংবা মজুদ করলেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যায়। দেশের ধারা অনুযায়ী আতশবাজি নিষিদ্ধ।
শুধু জাতীয় দিবস গুলোতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি নিয়ে পটকা কিংবা আতশবাজি ফোটানো যায়।
সহজেই মিলছে বিস্ফোরক সরঞ্জাম
লালবাগ এলাকার চকবাজার ও শাঁখারিবাজার মার্কেটে আতশবাজি ও ফানুসের বড় মার্কেট রয়েছে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, প্রকাশ্যে ফানুশ ও আতশবাজির সরঞ্জাম মিলছে। এ সময় কথা হয় আতশবাজি কিনতে আসা একজন ক্রেতার সাথে। তিনি দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে জানান, বাসায় বড় ভাইয়ের হলুদের অনুষ্ঠান তাই আনন্দ ফুর্তি করতে আতশবাজি ক্রয় করতে এসেছেন।
আতশবাজি কিনতে কোন ঝামেলা পোহাতে হয় কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, শাঁখারিবাজারে প্রায় দোকানেই পাওয়া যায়। তবে ফানুশ ডিসপ্লে করে রাখা হলেও আতশবাজি ডিসপ্লে করা হয়না দোকানে। দোকানে গিয়ে চাইলে ভেতর থেকে বাহির করে দেয়।
জনসচেতনতা বৃদ্ধির তাগিদ
ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টাফ অফিসার মোঃ শাহজাহান শিকদার দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে বলেন, জনগণকে এই বিষয়ে সচেতন হতে হবে। কেননা এটা কিন্তু সাধারণ জনগণই ভুক্তভোগী হচ্ছে। তাই আইনী প্রক্রিয়ার চেয়ে এখন সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
১০ বছরের শাস্তির বিধান
বিস্ফোরক উপাদানাবলী আইন ২০০২-এর ৩ ধারায় বলা হয়েছে, যে কোনো ব্যক্তি বেআইনিভাবে বিপজ্জনক কোনো বিস্ফোরক দ্রব্যের বিস্ফোরণ ঘটায়, তা হলে ওই ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা ১০ বছরের কারাদণ্ড হবে। তবে এই শাস্তি কোনোভাবেই ৫ বছরের কম হবে না।
অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের উদ্দেশ্যে কোনো ব্যক্তি যদি নিজ দখলে বা নিজ হেফাজতে নিজ বাসাবাড়িতে বা অন্য কোথাও বিস্ফোরক পদার্থ রাখেন তাহলে সেই ব্যক্তি বিস্ফোরক দ্রব্যাদি আইনের ৫ ধারা মোতাবেক সর্বোচ্চ ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও সর্বনিম্ন ২ বছর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এ ধরনের অপরাধে জননিরাপত্তার সার্থে সরকার বাদী হয়ে মামলা করেন।