বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করেছে কেন্দ্রীয় সংসদ। সংগঠনটির এক সদস্যের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আসার পর সে বিষয়ে ‘যথাযথ পদক্ষেপ’ না নেওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলী সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দপ্তর সম্পাদক রেজোয়ান হক মুক্ত স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অভিযুক্তকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তে সীমাবদ্ধ থাকাকেই যথেষ্ট মনে করা হয়। কিন্তু এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তির বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব থাকার কোনো অধিকার নেই। সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত আকিফ আহমেদের ছাত্রত্ব বাতিলের কোনো দাবি করেনি। এর মধ্য দিয়ে অভিযুক্তের প্রতি সুস্পষ্ট নমনীয়তা প্রদর্শন করা হয়েছে।
এ ছাড়া কোনো প্রকার আনুষ্ঠানিক প্রেস বিজ্ঞপ্তি আকারে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। কেবল ফেসবুক পেজে পোস্ট করে দায়সারার চেষ্টা হয় যাতে সংগঠনের প্যাড, দপ্তর সম্পাদকের স্বাক্ষর ও তারিখ ব্যবহার করা হয়নি।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ফেসবুক পোস্টে ধর্ষণকারীর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত জানাতে গিয়ে অপ্রাসঙ্গিকভাবে কিছু বিষয়ের অবতারণা করা হয় যার ফলে ‘ভিকটিম ব্লেমিং’-এর সুযোগ করে দেওয়া হয় এবং তাতে অপরাধকে লঘুভাবে উপস্থাপনের প্রয়াসও লক্ষণীয়। ওই ফেসবুক পোস্টে বিভিন্ন ব্যক্তি ভিকটিমের জন্য মানহানিকর বক্তব্য প্রদান করলেও পোস্টটি সরিয়ে নেওয়ার আগ পর্যন্ত সেসব মন্তব্যের একটিও মুছে ফেলা হয়নি। ভিকটিম ব্লেমিংয়ের বিষয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে প্রথম ফেসবুক পোস্টটি সরিয়ে নিয়ে আরেকটি পোস্ট প্রদান করা হয় এবং এবারেও আনুষ্ঠানিক প্রেস রিলিজ প্রদানের প্রয়োজনবোধ করেনি ঢাবি সংসদ। সর্বশেষ তৃতীয় আরেকটি পোস্টের অবতারণা করে প্রথম পোস্টে দেওয়া বিতর্কিত বক্তব্যের পক্ষেই যুক্তি তুলে ধরার চেষ্টা করা হয় এবং একইসঙ্গে ভিকটিমের পরিচয় প্রকাশ পায় এমন তথ্য সরবরাহ করা হয়। তবে সেই ফেসবুক পোস্ট অপসারণ কিংবা ভিকটিমের পরিচয় প্রকাশের জন্য কোনো প্রকার ক্ষমা প্রার্থনা করে কোনো বিবৃতি দেয়নি ঢাবি সংসদ।
বিজ্ঞপ্তিতে সভার অন্যান্য সিদ্ধান্তগুলোও জানানো হয়। সেগুলো হলো- আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাংগঠনিক ইমেইল ও ফেসবুক পেজ কেন্দ্রীয় সংসদ বরাবর বুঝিয়ে দেওয়া, ছাত্র ইউনিয়নের নিপীড়নবিরোধী সেলকে এ ঘটনা তদন্ত করে আগামী ৭ দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলী বরাবর চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা এবং অভিযুক্তকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের জন্য সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি জানানোসহ অভিযোগকারী যদি কোনো প্রকার আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চান সেক্ষেত্রে সাংগঠনিকভাবে সর্বোচ্চ সহযোগিতা নিশ্চিত করা।