এপ্রিল ৫, ২০২৩, ১২:৪৪ এএম
আবারও খুনের ঘটনা ঘটল নারায়ণগঞ্জে। জেলার আড়াইহাজারে তুলে নিয়ে গিয়ে মাহাবুব আলম (৩০) নামে এক যুবদল নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর বাবা, মা, তাঁর দুই ভাইয়ের সামনেই তাঁকে পিটিয়ে, কুপিয়ে ও চোখ উপড়ে ফেলে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার সকালে উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়নের সিংরাটি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, মাহাবুব আলম এলাকার হানিফ মিয়ার ছেলে এবং ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক। দলীয় পরিচয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা যুবদলের সদস্যসচিব মশিউর রনি।
জানা গেছে, এই হত্যকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তির নাম হাশমত মিয়া। স্থানীয়ভাবে দুপ্তারা ইউনিয়নের আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা হিসেবে তিনি পরিচিত।
যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় কমিটির সহ দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূইয়া স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে হাশমতকে দুপ্তারা ইউনিয়ন ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, একই গ্রামের হাশমত মিয়ার এক আত্মীয়ের কাছ থেকে জমি কিনেন নেন মাহাবুব। জমির কেনার পর সেই জমি পৈতৃক সূত্রে দাবি করেন হাশমত। এ নিয়ে বিরোধ চলছিল। পরবর্তীতে স্থানীয় সালিসের মাধ্যমে জমিটি কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দেন হাশমত। সেই প্রস্তাবে রাজি হয়ে বায়না বাবদ মাহবুবকে ৩ লাখ টাকা দেন তিনি। কিন্তু পরবর্তীতে হঠাৎ সেই টাকা ফেরত চান হাশমত। মাহাবুব সেই টাকা খরচ করে ফেলায় টাকা পরিশোধের জন্য কিছুদিন সময় চান। এ নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এরই জেরে মঙ্গলবার সকালে মাহাবুবকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
নিহতের চাচা মজিবর রহমান বলেন, বায়নার টাকা ফেরত নিয়েই বিরোধ শুরু হয় দুজনের। সকালে ১০টার দিকে মাহাবুব বাজারে গেলে সেখানে হাশমত ও তাঁর লোকজন মারধর করে। পরে একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশায় তাকে তুলে নিয়ে হাশমতের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে তাঁকে লাঠিপেটা, ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ এবং চোখ তুলে ফেলে তাঁরা। মারধরে অংশ নেয় হাশমত, তার ভাই কিসমত ও কামালসহ বেশ কয়েকজন।
মজিবর আরও বলেন, আমরা খবর পেয়ে মাহাবুবের বাবা, মা, তাঁর দুই ভাই হাশমতের বাড়িতে গিয়ে প্রাণ ভিক্ষা চাইতে থাকি। কিন্তু তারপরেও হাশমত তাঁর লোকজন দিয়ে মারতে মারতে অজ্ঞান করে ফেলে। অচেতন অবস্থায় তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক তৈয়ব বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হাশমতের ভাই কিসমত ও কামালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হাশমতকে ধরতে আমাদের অভিযান চলছে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।