রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহানের দেওয়া আলোচিত নিয়োগে নিয়োগপ্রাপ্তদের যোগদান স্থগিত করা হয়েছে। আজ শনিবার (৮ মে) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান হয়। বিজ্ঞপ্তিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত বুধবার (৫ মে) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাডহকে যে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তা শিক্ষা মন্ত্রণালয় অবৈধ ঘোষণা করেছে। একইসঙ্গে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে মন্ত্রণালয় কর্তৃক একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির রিপোর্টের প্রেক্ষিতে কোনো রূপ সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত নিয়োগপত্রের যোগদান এবং তদসংশ্লিষ্ট সব কার্যক্রম স্থগিত করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
এদিকে, শনিবার (৮ মে) সকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি ক্যাম্পাসে আসে। ক্যাম্পাসে এসেই কমিটি বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক সোবহানকে তলব করে। বিকাল ৩টার দিকে অধ্যাপক সোবহান উপাচার্যের কার্যালয়ে কমিটির সঙ্গে বসেন। প্রায় দুই ঘণ্টা পর কমিটির সঙ্গে উপাচার্যের সাক্ষাৎ শেষ হয়।
কমিটির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বেরিয়ে সদ্য বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান সাংবাদিকদের বলেন, দীর্ঘদিন থেকে ক্যাম্পাসে কোনো নিয়োগ হয়নি। আমরা নিয়োগ প্রক্রিয়াটা অনেক আগেই শুরু করেছিলাম। কিন্তু এর মধ্যেই করোনা ভাইরাস আসলো। এরই মধ্যে কিছু শিক্ষক বলে যে নিয়োগ দেওয়া যাবে না, নিষেধাজ্ঞা আসবে। এরপরেই আমার ই-মেইলে নিষেধাজ্ঞাটি আসে। আমি বিষ্মিত হয়েছি, সেই শিক্ষকরা আগে থেকেই নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি কি করে জানলো?
তিনি বলেন, আমি মনে করি যারা নিয়োগ পেয়েছে তারা সবাই নিয়োগ ডিজার্ভ করে। এখানে মানবিক দিকটি বিবেচনা করা হয়েছে।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৭৩ এর অধ্যাদেশে একটা আইন আছে। সেই আইনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে একটা ক্ষমতা দেওয়া আছে। সেই আইনের বলে আমি নিয়োগটা দিয়েছি। যেখানে সুস্পষ্ট আইন আছে সেখানে নিষেধাজ্ঞা আসতে হলে তো ওই আইনটা বাতিল হওয়া উচিত।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তা নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখতে এসেছি যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারি।
তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় যেভাবে বলেছে আমরা সেভাবে কাজ করছি। আমরা এই বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গেই কথা বলেছি। আমরা সকল তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেছি, সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র দেখেছি। আমরা সেসব কাগজপত্র পর্যালোচনা করে আমাদের প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেবো। আমরা চাই যে উদ্দেশ্য নিয়ে এই বিশ্ববিদ্যাল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেই উদ্দেশ্য যেন সফল হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও গত বুধবার (৬ মে) ক্যাম্পাসে মেয়াদের শেষ দিন শিক্ষকসহ ১৪১ জনকে বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেন রাবির বিদায়ী এই উপাচার্য। সেই নিয়োগকে অবৈধ ঘোষণা করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।