২০১৮ সাল থেকে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র্যাব) আর্থিক সহায়তা দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস। র্যাবের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিশ্বাসযোগ্য তথ্য পাওয়ার পর এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
বুধবার (১২ অক্টোবর) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বিভিন্ন দেশের পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান নেড প্রাইস।
গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাবেক ও বর্তমান ছয়জন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র।
এ ব্যাপারে নেড প্রাইস বলেন, ‘বিশ্বাসযোগ্য তথ্যের ভিত্তিতে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০১৮ সাল থেকে র্যাবকে সহযোগিতা দেওয়া আমরা বন্ধ করে দিই। গ্লোবাল ম্যাগনিটস্কি আইনের আওতায় র্যাব এবং এর সাবেক ও বর্তমান ছয় জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আমরা ২০২১ সালের ডিসেম্বরে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছি। অর্থাৎ নিষেধাজ্ঞার আগেই আমাদের সহযোগিতা দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়।’
মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে মানবাধিকারের গুরুত্বের কথা তুলে ধরে নেড প্রাইস বলেন, ‘বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার যে কোনো দেশ বা বিশ্বের যে কোনো প্রান্তেই হোক না কেন, আমরা মানবাধিকার সমুন্নত রাখার বিষয়টিকে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রে রাখি।’
নেড প্রাইস বলেন, ‘এই অঙ্গীকারের ধারাবাহিকতায় এ বিষয়টিতে মনোযোগ আনার পাশাপাশি যারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী, তাদের সামনে নিয়ে আসি। র্যাব এবং এর ছয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা ও ভিসায় বিধি-নিষেধের লক্ষ্য হচ্ছে, বাহিনীটিতে জবাবদিহি ও সংস্কার নিশ্চিতের পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন রোধ করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিতের পাশাপাশি অপরাধ দমনে নিজেদের সামর্থ্য, বিচারিক কার্যক্রম এবং আইনের শাসনের সুরক্ষা জোরদারের লক্ষ্যে অংশীদার দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার সময় মৌলিক নীতিগুলোর বিকাশ হয়ে থাকে।’
বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশের ওপর সরকারের হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, ‘সমাবেশ ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সর্বজনীন অধিকারের চর্চাকারীদের ওপর হামলার ক্ষেত্রে আমাদের বক্তব্য অভিন্ন। শান্তিপূর্ণ উপায়ে এবং আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে শান্তিপূর্ণভাবে কথা বলা, সমাবেশ করা এবং নিজেদের আকাঙ্ক্ষার চর্চার অধিকার সবখানেই আছে।’