দালালীর মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া টেকনাফ বন্দরের সাবেক চুক্তিভিত্তিক কম্পিউটার অপারেটর নুরুল ইসলামকে (৪১) রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে একটি গোয়েন্দা সংস্থা ও র্যাবের যৌথ অভিযানে সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দিবাগত মধ্যরাতে মোহাম্মদপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মোঃ নুরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।
অভিযানে তার কাছ বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকার জাল নোট, মিয়ানমারের মুদ্রায় ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা, ৪ হাজার ৪ ’শত পিস ইয়াবা ট্যাবলেট এবং নগদ ২ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত নুরুল ইসলাম জানায় যে, ‘সে ২০০১ সালে টেকনাফ স্থল বন্দরে চুক্তিভিত্তিক দৈনিক ১৩০ টাকা হারে কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকুরী নেয়। বন্দরে কর্মরত থাকাকালীন সে চোরাকারবারী, শুল্ক ফাঁকি, অবৈধ পণ্য খালাস, দালালি ইত্যাদির কৌশল রপ্ত করে। অতঃপর তার অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে সে বন্দরে বিভিন্ন রকম দালাল সিন্ডিকেটে যুক্ত হয়। এক পর্যায়ে নিজেই একটি দালালী সিন্ডিকেট তৈরী করে। ২০০৯ সালে সে চাকুরী ছেড়ে দিয়ে তারই আস্থাভাজন একজনকে উক্ত কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগের ব্যবস্থা করে। একইসাথে সে দালাল সিন্ডিকেটটির নিয়ন্ত্রণও রেখে দেয়। এভাবে সে বন্দর থেকে দালালীর মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।
গ্রেফতারকৃত নুরুল টেকনাফ বন্দর কেন্দ্রীক দালাল সিন্ডিকেটের মূলহোতা। তার সিন্ডিকেটে ১০-১৫ জন সদস্য রয়েছে। ঢাকা শহরে তার ৬ টি বাড়ি ও ১৩ টি প্লট রয়েছে। এছাড়াও সাভার, টেকনাফ, সেন্টমার্টিন, ভোলাসহ বিভিন্ন জায়গায় নামে/বেনামে সর্বমোট ৩৭ টি জায়গা/প্লট/বাগানবাড়ি/বাড়ি রয়েছে। তার অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদের আনুমানিক মূল্য ৪৬০ কোটি টাকা। তার নামে বেনামে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ১৯ টি ব্যাংক একাউন্ট রয়েছে। বর্তমানে সে জাহাজ শিল্প ও ঢাকার সন্নিকটে বিনোদন পার্কে বিনিয়োগ করছে বলে জানা যায়।
আটককৃত নুুরুলের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।