শেখ হাসিনার চাওয়াকে জোরালো করেছে নতুন মার্কিন ভিসানীতি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

মে ২৫, ২০২৩, ০৫:২৩ পিএম

শেখ হাসিনার চাওয়াকে জোরালো করেছে নতুন মার্কিন ভিসানীতি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে, তা অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাওয়াকে আরও জোরালো করেছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

জাতীয় নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পেতে হলে নতুন এক নীতিমালার শর্ত পূরণ করতে হবে। এর আওতায় বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে তার জন্য দায়ী ব্যক্তি এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

এবিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “তারা (যুক্তরাষ্ট্র) নিজেদের নীতি নির্ধারণ করেছেন। কিন্তু আমাদের দেশে তো আর গুজব রটনাকারীর অভাব নেই। তাই বিভিন্ন রকম বক্তব্য শোনা যাচ্ছে। যে বক্তব্য তারা (যুক্তরাষ্ট্র) দিয়েছেন, সেটা আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেটা চাচ্ছেন, সেটিকে আরও জোরালো করেছে।”

এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, “আমরা একটি স্বচ্ছ নির্বাচন চাই, যা হবে অবাধ ও সুষ্ঠু। বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বদ্ধপরিকর। এ জন্য যত ধরনের প্রক্রিয়া দরকার, তা করা হচ্ছে। যাতে কারচুপির ভোট না হয়, সে জন্য ছবিসহ জাতীয় পরিচয়পত্র করা হয়েছে। কেউ কেউ রাতের অন্ধকারে ভোট হওয়ার কথা বলছে, সে কারণে আমরা স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স করেছি। আমরা একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন করেছি।”

এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, “এখন বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র যে নীতি প্রকাশ করেছে, তাতে সেই কথাই বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তারা বলেছে, ‘আমরা (যুক্তরাষ্ট্র) যে নীতি প্রকাশ করলাম, এটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে আগ্রহ সেটিকে আরও শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যাবে’, এটা ভালোর জন্যই হয়েছে।”

প্রসঙ্গত, বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এক বিবৃতিতে নতুন মার্কিন ভিসা নীতি ঘোষণা করেন। বিবৃতিটি তিনি টুইটারেও শেয়ার করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র গত ৩ মে বাংলাদেশ সরকারকে ওই সিদ্ধান্তের কথাও জানিয়েছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

ব্লিঙ্কেন ওই টুইট বার্তায় বলেন, ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনপ্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে আমি আজকে একটি নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করছি। এই নীতির অধীনে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচনপ্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যেকোনো বাংলাদেশি ব্যক্তির জন্য ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপে সক্ষম হবে।’

যাঁদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ হবে, তাঁদের মধ্যে বাংলাদেশের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা–কর্মচারী, সরকারপন্থী ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং আইন প্রয়োগকারী, বিচার বিভাগ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।

গণতান্ত্রিক নির্বাচনপ্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে, এমন কাজের মধ্যে রয়েছে ভোট কারচুপি, ভোটারদের ভয় দেখানো, সহিংসতার মাধ্যমে জনগণকে সংগঠিত হওয়ার স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার প্রয়োগ করতে বাধা দেওয়া এবং বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে রাজনৈতিক দল, ভোটার, সুশীল সমাজ বা গণমাধ্যমকে তাদের মতামত প্রচার করা থেকে বিরত রাখা।

ব্লিঙ্কেন আরও বলেন, “অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব ভোটার, রাজনৈতিক দল, সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যমসহ সবার। যারা বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে চায়, তাদের সবাইকে আমাদের সমর্থন দিতে আমি এই নীতি ঘোষণা করছি।”

Link copied!