নভেম্বর ২২, ২০২১, ০৭:২৯ পিএম
সরকার জনগণের উন্নয়নের জন্য ১০০ টাকা বরাদ্দ দিলে গ্রামে মাত্র ১০ টাকা পৌঁছায় বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তবে সরকার এ বলয় ভেঙে ফেলতে নানাভাবে কাজ করছে বলেও তিনি জানান।
সোমবার (২২ নভেম্বর) রাজধানীর হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে (এলডিসি) উত্তরণ নিয়ে জাতীয় সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত এই সংলাপে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “কেন্দ্র থেকে ১০০ টাকা বরাদ্দ হলে তা ঠিকাদারের মাধ্যমে সাব-ঠিকাদারের হাতে যায়। সাব-ঠিকাদার আবার তার সাব-ঠিকাদারের হাতে দেয়। এভাবে নানা হাত বদলের মাধ্যমে ১০০ টাকা বরাদ্দ দিলে গ্রামে ১০ টাকা পৌঁছায়। তবে সরকার এই বলয় ভেঙে ফেলতে নানাভাবে কাজ করছে।”
দেশের উন্নয়ন তুলে ধরে এম এ মান্নান বলেন, “সরকার স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন করেছে বলেই আয়ু বেড়ে ৭৬ হয়েছে। মাথাপিছু আয়ে ভারত ও পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে। প্রকৃত হিসাব করলে মাথাপিছু আয় ৩ হাজার ডলার ছাড়িয়ে যাবে। আমি বলতে পারি, পেছনে ফেরার সময় নেই।” ২০৩০ সালে মাথাপিছু আয় ৪ হাজার মার্কিন ডলার ছাড়াবে বলেও তিনি জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা মোকাবিলায় জীবন ও জীবিকার মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “সিলেকটিভ লকডাউন দিয়েছেন। পোশাক শ্রমিক, ধান কাটা শ্রমিক এবং অন্যান্য শ্রমিকদের জন্য লকডাউন ছিল না। সেই সঙ্গে অর্থনীতি সচল রাখতে সোয়া লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা দিয়েছেন।” এখানে কিছু চুরি হলেও প্রণোদনা কাজে লেগেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “চুরি কিছু হচ্ছে। কিন্তু সেটি চিল্লাচিল্লি করে থামানো যাবে না। এর জন্য আইন আছে আইনের মাধ্যমে ধরতে হবে।”
গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে: মঈন খান
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, “গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমাজের মধ্যে ব্যালেন্স নেই। মাথাপিছু আয় বাড়লেও লাভ নেই, যদি আয়ের সমবণ্টন না হয়। দেশে ধনী গরিবের বৈষম্য বাড়ছে। মেধাবি তরুণরা দেশে থাকতে চায় না। সুযোগের অভাবে তারা এখানে মেধা চর্চা করতে পারে না।”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ও সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী ড. আব্দুল মঈন খান। ছবি: সংগৃহীত
ব্যাপক দুর্নীতি ও জবাবদিহীতার অভাব প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতাকে নষ্ট করে দিয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, “অনেকে টাকা তৈরির মেশিনে পরিণত হয়েছেন। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা দেশে এসে ক্লান্ত হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। গণতন্ত্র না থাকায় সুশাসন হচ্ছে না। কাগুজে শান্তি বিরাজ করছে। মেগা প্রকল্প হচ্ছে ভালো কথা। কিন্তু এগুলোর ব্যবস্থাপনার চ্যালেঞ্জ রয়েছে।” তবে তৈরি পোশাক ও রেমিট্যান্স ভালো হচ্ছে বলে সরকারের প্রশংসা করেন।
সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজের চেয়ারম্যান ড. মানজুর আহমেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংলাপে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী শেখ শহীদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।